স্টাফ রিপোর্টার ::
বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্ম যেখানে টিকটক, লাইকি, মোবাইল গেমসে আসক্ত, সেই সময় বিশ্বম্ভরপুরের এক তরুণ কৃষকদের কথা চিন্তা করে তৈরি করেছে বিমান। অক্লান্ত পরিশ্রম করে তরুণ ঝুটন সম্রাট যীশু ব্যাটারিচালিত বিমান তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। সে এই বিমান সফলভাবে আকাশে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট উড়াতে ও মাটিতে নামাতে পেরেছে। এই উদ্ভাবন দেখে উৎফুল্ল তার পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসী।
ঝুটন সম্রাট যীশু বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের প্যারীনগর গ্রামের তরুণ উদ্যোগক্তা। তার বাবা গোপেন্দ্র চন্দ্র দাস (৫৫) খেটে-খাওয়া দিনমজুর ও মা ইলা রাণী দাস (৪০) গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে ঝুটন দ্বিতীয়।
বিমানটির মাধ্যমে জমিতে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করা যাবে খুব সহজে। যার ফলে কষ্ট কমবে কৃষকদের।
ঝুটনের পরিবারের লোকজন ও তার বন্ধুরা জানায়, ছোটবেলা থেকে নতুন কিছু আবিষ্কার করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকে ঝুটন। কিন্তু আর্থিক অবস্থা পদে পদে তার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে স্কুলে যাতায়াতের খরচ বাচিয়ে নানান ধরনের সরঞ্জাম কিনে কখনো তৈরি করেছে স্পিড বোট, কখনো ড্রোন। এবার ব্যতিক্রমী চিন্তায় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বিমান। এই বিমান দেশের সাধারণ কৃষকদের কৃষি কাজ সহজের জন্য নতুনভাবে কিছু করতে তার এই প্রচেষ্টা।
ঝুটন সম্রাট যীশুর বড়ভাই ঝলক রেজা অপি বলেন, আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবার বাবার রোজগারের মধ্যে চলে। সেক্ষেত্রে কেউ চাইনি অযথা টাকা খরচ হোক। প্রথমে আমরা তাকে সাপোর্ট করিনি। কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। তার ব্যতিক্রমধর্মী প্রচেষ্টার কারণে অনেকটাই সফলতা দেখে তারপর সাপোর্ট করি।
বন্ধু পিপাসা দাস বলেন, ঝুটন সম্রাট যীশু সব সময় কিছু না কিছু আবিষ্কার করার চিন্তা করে। ঝুটন গাড়ি, স্পিড বোট ও সর্বশেষ ব্যাটারিচালিত বিমান তৈরি করেছে। সে আমাদের উপজেলাবাসীর গর্ব। তার স্বপ্ন পূরনে সরকার ও বিভিন্ন মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দিগেন্দ্র বর্মণ সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. মশিউর রহমান বলেন, ঝুটন এই কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এমন আবিষ্কার সত্যি প্রশংসার যোগ্যতা রাখে। তবে পারিবারিকভাবে সে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার স্বপ্নগুলো আড়ালে থেকে যাচ্ছে। তাই সরকারি সহায়তা পেলে সে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সফল হবে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজিউর রহিম জাদিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং তাদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন। তার স্বপ্ন পূরণে ও তার আবিষ্কার ও তৈরি করা বিমান যেন জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে তার জন্য আমরা তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।