1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

তাহিরপুরে নৌকা ডুবির শঙ্কা

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২২

সাজ্জাদ হোসেন শাহ্ ::
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তাহিরপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ে ভুলের কারণে নৌকার ভরাডুবির শঙ্কা রয়েছে বললেন বিদ্রোহীরা। অপরদিকে নৌকার মনোনীতরা বলছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরাই নৌকা প্রতীকের চরম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন ব্যতীত সব ক’টি ইউনিয়নে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী। একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ৬টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন। যে কারণে এখন দলীয় প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়েও নির্বাচনী মাঠে হিমশিম খাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বালিজুরী ইউনিয়নে অন্যান্য দল সমর্থিত কোন প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী দু’জন নির্বাচন করছেন। বালিজুরী ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আজাদ হোসেন।
বাদাঘাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহ্বায়ক সুজাত মিয়া আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন হেভিওয়েট দুই বিদ্রোহী প্রার্থী- বাদাঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ও সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি বিগত ১০ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে রয়েছি। তাছাড়া আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও ছিলাম। প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির শঙ্কা রয়েছে। তার সাথে সুর মিলিয়ে একই কথা বললেন অপর বিদ্রাহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন।
বড়দল উত্তর ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জামাল উদ্দিন। এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাসুক মিয়া। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে আমি পরাজিত হয়েছি। এবার আমার নির্বাচনী মাঠ অনেক ভালো, ইউনিয়নের জনগণ আমার পাশে রয়েছেন। দল আমাকে মনোনয়ন না দিলেও এবার আমি বিজয়ী হবো।
বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নে নৌকা পেয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে কাছে টানলেও দলের বিদ্রোহী হেভিওয়েট প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হাজী এম ইউনুছ মিয়া তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে আমি পরাজিত হয়েছি। আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে সামনের সারিতে ছিলাম। কিন্তু দলীয়ভাবে মনোনয়ন পাইনি। দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার কোন ইচ্ছে ছিল না। এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ইচ্ছেতেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আশা করি বিজয়ী হবো।
একই অবস্থা শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে আ.লীগ প্রার্থীর বেলায়ও। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সভাপতি আবুল খায়ের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তবে এ ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন খান ও তার ছেলে পারুল খান মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। শনিবার পিতা ও পুত্র দু’জনই উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তবে এ ইউনিয়নে আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তিনি হলেন শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিনের পুত্র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সালেহ আহমদ সবুজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী জানান, প্রার্থী বাছাইয়ে ভুলের কারণে তাহিরপুরে নৌকার ভরাডুবির শঙ্কা রয়েছে। তারা আরও বলেন, উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী আবুল হোসেন খান যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। তাছাড়া তিনি অনেক প্রবীণ। তিনি ইউনিয়নে অত্যন্ত জনপ্রিয়। দল প্রার্থী বাছাইয়ে এমন ভুল করবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
একই অবস্থা শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে নৌকা মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও বর্তমান চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ সরকার। ভোটের মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান রুবেল এবং আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিতে বিশ্বাসী সাংবাদিক কৃষ্ণগোপাল মানব।
দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি আশাবাদী ইউনিয়নের সকল নেতৃবৃন্দ নৌকার পক্ষে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করবেন।
একই ইউনিয়নের দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী হাজী ইউনুছ মিয়া বলেন, আমি গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। সামান্য ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হতে পারিনি। নৌকা না পাওয়ার পর নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু ইউনিয়নের জনগণের দাবি উপেক্ষা করতে পারিনি। তারাই আমাকে ভোটের মাঠে নামিয়েছেন। আমি তাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারবো না। আমি তাদের কাছে সেবক হয়ে কাজ করো যাবো।
বালিজুরী ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী আজাদ হোসেন বলেন, দলীয় অনেক নেতাকর্মী ও ইউনিয়নের সর্বসাধারণ আমার সাথে নির্বাচনের মাঠে আছেন। আমি আশা করি নির্বাচনে বিজয়ী হবো।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রত্যেকের পরিচিতি আওয়ামী লীগকে ঘিরে। এখন অনেকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিরোধিতা করছেন। এতে করে সাংগঠনিকভাবে দলের অবস্থান দুর্বল হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com