ইউপির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটেছে এবং এতে ৭ জন নিহতসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। আমাদের শান্তির জনপদ, সম্প্রীতির জনপদ সুনামগঞ্জেও এর আচর লেগেছে। শুক্রবার দোয়ারাবাজারে ইউপি নির্বাচনে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধের জেরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওইদিন বেলা ৩টার দিকে উপজেলার বাদে গোরেশপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানাযায়, হামলাকারীরা দোহালিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত বৃহ¯পতিবারের নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আলী হোসেনের সমর্থক। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদে বলা হয়েছে- শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোরেশপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া মসজিদে মেম্বারপ্রার্থী আলী হোসেন ও আল-আমিনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর আলী হোসেন পক্ষের অর্ধশতাধিক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফখর ও ছবিরের নেতৃত্বে নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের বাড়িতে এসে আকস্মিক হামলা চালায়। এ সময় তারা লাঠিসোটা দিয়ে বাড়ির টিনের চাল ভাংচুর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। হামলাকারীরা আলমিরা ভেঙে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ ঘরের মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের ভাই নূর উদ্দিনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাংচুর করে হামলাকারীরা। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন সাংবাদিক মাসুম হেলালের বড়ভাই। এই ঘটনার বিবরণ পাঠে চোখের সামনে সহিংসতার ভয়াবহ চিত্রই ভেসে ওঠে।
নির্বাচন হল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রধান ভিত্তি। নির্বাচনে একজন নাগরিক কোনো প্রার্থীকে সমর্থনের অধিকার রাখেন। কিন্তু সমর্থনকারীর ওপর আক্রোশান্বিত হয়ে হামলা কোনো সভ্য মানুষ করতে পারে না। অভিযোগ ওঠেছে- হামলাকারীরা দোহালিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে বিজয়ী সদস্য প্রার্থী আলী হোসেনের সমর্থক। নির্বাচনের পরপরই ওই ‘জনপ্রতিনিধি’র সমর্থকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর লুটপাট করেছে। এই অবস্থায় বলার অপেক্ষা থাকেনা কার ইন্ধনে তারা এই দুষ্কর্ম করেছে। অবস্থা যদি এরকম হয় তাহলে সামনে আরও ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে ওই জনপদের মানুষের জন্য। যা অত্যন্ত উদ্বেগের।
আমরা মনেকরি, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘরে হামলা মানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের চেতনার মূলে হামলা। স্বাধীন বাংলাদেশে হামলাকারীরা যে স্পর্ধা দেখিয়েছে তা কখনোই মেনে নেয়া যায়। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে এবং হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। নয়তো তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। শান্তির জনপদকে অশান্ত করে তুলবে এই দুষ্কৃতকারীরা।