বিশেষ প্রতিনিধি ::
দোয়ারাবাজারে বিগত নির্বাচনী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ‘বিদ্রোহী’ তকমা পাওয়া আট ব্যক্তি এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দলীয় পদ-পদবীতেও রয়েছেন।
বিদ্রোহীদের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে হাইকমান্ডের জিরো টলারেন্স অবস্থান থাকা পরও গ্রুপিং রাজনীতিতে মাথার ওপরে থাকা ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়ে আবারো ঝড়ের ঝাপটা সামলানো যাবে বলে মনে করছেন তারা।
অভিযোগ রয়েছে, ছাতক-দোয়রারাজারে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বহু পুরোনো বিভক্তির জেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের রাজনৈতিক সমীকরণের সূত্র ধরে কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাদের প্রকাশ্য আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছেন এসব বিদ্রোহী প্রার্থী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পান আব্দুল হামিদ। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালিক বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দলীয় ভোট দুইভাগ হয়ে যায়। এই সুযোগে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন বিএনপি মনোননীত প্রার্থী আব্দুল বারি। আব্দুল খালিক আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন।
এদিকে, উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে বিজয়ী হন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল হক। এবার তিনি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।
সীমান্তবর্তী পূর্ব বাংলাবাজার ইউনিয়নে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিজয়ী হন যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিন রানা। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা এই নেতা এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
অপরদিকে, বগুলা ইউনিয়নে গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মিলন খানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার ভরাডুবি ঘটান আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আলী আপন। সেই সুযোগে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপির আরিফুল ইসলাম জুয়েল। আপন এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
এদিকে, নরসিংহপুর ইউনিয়নে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিনের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দলের বিদ্রোহী রুবেল ভূঁইয়া। তিনি এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী।
দোহালিয়ায় আওয়ামী লীগের টিকিটে গত নির্বাচনে বিজয়ী হন দলিল লেখক কাজী আনোয়ার মিয়া আনু। সেই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীমুল ইসলাম শামীম এবার নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।
পান্ডারগাঁওয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজদ আলী বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় পরাজিত হন দলীয় প্রার্থী আব্দুল ওয়াহিদ। আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে বিজয়ী হন বিএনপির ফারুক আহমদ। আমজদ এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দৌড়ঝাঁপে রয়েছেন।
একইভাবে মান্নারগাঁওয়ে বিদ্রোহী শামসুদ্দিন মাস্টারের কারণে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের বরুণ চন্দ্র দাস। বিজয়ী হন বিএনপির আবু হেনা আজিজ। শামসুদ্দিন এবার নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান বলেন, বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে আমরা কাজ করছি। কোনও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ সুপারিশ করবে না।