বিশেষ প্রতিনিধি ::
মধ্যনগর উপজেলার উবদাখালি নদী ও সোমেশ্বরী নদীর উপর দুটি সেতু নির্মাণকাজ চলছে ধীর গতিতে। এক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলাকে দায়ি করছেন স্থানীয়রা। ২০২১ সালে ৮ জুন সেতু দুটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত উবদাখালি সেতুর ৫০ ভাগ ও সোমেশ্বরী নদীর উপর কায়েতকান্দা সেতুর ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সেতু দুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে দিন বদলের ধারায় উন্নয়নের মহাসোপানে যুক্ত হবে সুনামগঞ্জের ৩টি উপজেলা। জেলার সীমান্ত এলাকা মহিষখলা, ট্যাকেরঘাট, যাদুকাটা, লাউড়েরগড় হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় নদী পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ নিয়ে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে। দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সেতু দ্রুত নির্মাণের দাবি তুলেছেন উপজেলাবাসী।
মধ্যনগর উপজেলার বাসিন্দা শরীফুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, জনদাবির প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রচেষ্টায় সেতু নির্মাণ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি অনুমোদিত হয়। মধ্যনগর বাজার ও পিঁপড়াকান্দার দূরত্ব কয়েকশ মিটার। তবে মাঝখান দিয়ে উবদাখালি নদী বয়ে চলায় পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ফেরি। ফেরি ঘাটে পৌঁছেই ফেরি পাওয়া গেলে ৫-৭মিনিটে পৌঁছা যায় এপার থেকে ওপারে। কিন্তু একবার ফেরি ওপারে চলে গেলে নতুন করে যাত্রী নিয়ে ফিরে আসতে সময় লাগে আধা ঘণ্টারও বেশি। ফেরি পারাপারে দুর্ঘটনার শিকার হবার পাশাপাশি প্রসূতি মাকে নিয়ে মহাসমস্যায় পড়তে হয় স্বজনদের।
এলজিইডি সূত্রে জানাযায়, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের (সিআইবিআরআর) আওতায় ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর উবদাখালি নদীর ওপর ৪৭ কোটি ৮২ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা ব্যয়ে ৩২০ মিটার এবং সোমেশ্বরী (কায়েতকান্দার পিছগাঙ) নদীর ওপর ৪১ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার ২২১ টাকা ব্যয়ে ৩১০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালে ৮ জুন সেতু দুটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত উবদাখালী সেতুর ৫০ ভাগ ও কায়েতকান্দা সেতুর ৪০ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, সেতুগুলো উপজেলা সদরের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে দিয়ে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তুলবে। কিন্তু সেতু নির্মাণ না হওয়ায় আমরা এখনো উপজেলা সদরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাই।
মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার বলেন, সেতু দুটি জনদুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি উপজেলার অভ্যন্তরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইলফলক তৈরি করবে। কিন্তু নিমাণ কাজের ধীর গতির কারণে সবাই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।
তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা বাগলী গ্রামের বাসিন্দা হাসিম মিয়া জানান, উবদাখালি নদী ও সোমেশ্বরী (কায়েতকান্দার পিছগাঙ) নদীতে সেতু দ্রুত নির্মাণ হলে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ সহজ হতো একই সাথে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকায় যাতায়াত সহজ হবে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, উন্নয়নের মহাযজ্ঞে স্বপ্নের দুটি সেতু এখন বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে। সেতু দু’টি নির্মাণ হলে উন্নয়নের মহাসোপানে যুক্ত হবে ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলা।
ধর্মপাশা উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী মো. আরিফ উল্লাহ খান বলেন, সেতু দুটির নির্মাণ কাজ চলছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হবে।