সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধীরে সুস্থে ও দেখে শুনে সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ শাখাগুলোর কমিটি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরে কেউ যেন শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করতে না পারে সে ব্যাপারে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।
গত সোমবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত একাধিক ছাত্রলীগ নেতা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির পাশাপাশি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সবাই নেতা হবে না, সম্ভবও নয়। এজন্য পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। আধুনিক ও প্রযুক্তি শিক্ষায়ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বেশি করে মনোযোগ দিতে হবে।
আলাপচারিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস হল কমিটির বিষয়ে বলেন, অনেক দিন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটি হয় না। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেও এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাড়াহুড়া না করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পরিস্থিতি দেখো। তারপর ধীরে সুস্থে, দেখে শুনে কমিটি দেওয়ার প্রস্তুতি নাও।
এ সময় হল কমিটি সম্মেলনের উদ্বোধনে অতিথি থাকার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানান সনজিত চন্দ্র দাস। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমরা তো ভালো কাজই করছো। আমার বয়স হয়েছে। তখন মজার ছলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো তোমাদের দাদির বয়সী।’ প্রসঙ্গক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ শাখাগুলোর সম্মেলনের বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় নেতাদের তারাহুড়ো না করে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধীরে সুস্থে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দেওয়ারও কথা বলেন তিনি।
এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ স¤পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ স¤পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম হোসেন, সাধারণ স¤পাদক স¤পাদক সাঈদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ স¤পাদক জুবায়ের আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আমরা নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। তিনি আমাদের আগামী দিনের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। নেত্রী আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে আমরা যেভাবে ছাত্রলীগের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি তা অব্যাহত রাখতে বলেছেন।
সূত্র জানায়, জাতিসংঘে যাওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারণ হয়েছিল। তবে সময় না মেলায় তখন তা হয়ে উঠেনি। সদ্যসমাপ্ত নিউইয়র্ক সফর ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই ছাত্রলীগের এই নেতাদের গণভবনে ডেকে নেন। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা ধরে সংবাদ সম্মেলনে চলে। সংবাদ সম্মেলন শেষ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আলাপ করেন।