স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবটি সার্বজনীন। এই উৎসবে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই অংশগ্রহণ করবেন। নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে নির্ভয়ে পূজা উদযাপন করুন। সম্প্রীতির উৎসবে যাতে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে এ বিষয়ে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।
আইনি নিরাপত্তা শতভাগ আশ্বাস দিয়ে তিনি আরও বলেন, পূজা উদযাপনকালীন যদি কোন ব্যক্তি বা চক্র বিন্দুমাত্র হুমকি প্রদান করে থাকে তবে তার জন্য কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি রয়েছে। নির্বিঘ্ন ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে তিন স্তরের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শতভাগ সচেষ্ট থাকবে।
মঙ্গলবার সকালে শাল্লা উপজেলা পরিষদ গণমিলনায়তনে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, র্যাব ৯-এর লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ, শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, আমি আশা করব অতীতের চেয়েও এবছর আপনারা আরও জাঁকজমকভাবে, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করবেন। অতীতের সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক-এই উৎসবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আমাদের বলেছেন এই উৎসবটি সার্বজনীন উৎসব, তাই সার্বজনীনভাবেই উৎসবটি আমাদের পালন করতে হবে। পূজা দেখতে এসে যেনো কেউ কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে যেতে না পারে, সেদিকে আমাদের সবার সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে প্রতিটি পূজায় নিজেদের একজন করে পাহারাদার নিয়োগ করুন। কুরুচিপূর্ণ গান বাজানো যাবে না, অশ্লীল নৃত্য করা যাবে না। শতশত বছরের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখতে হবে। দিনশেষে প্রতিটি পূজার খবর আমাদের দিবেন। পূজার ভাবগাম্ভীর্য যাতে বজায় থাকে শুধু এমন গানই বাজাবেন।
অপরদিকে, শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে দিরাইয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুর রহমান মামুনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম, র্যাব-৯ এর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী, দিরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান, পৌর মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা, দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলতাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক অ্যাডভোকেট অভিরাম তালুকদার, উপজেলা জাসদের সাধারণ স¤পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুরঞ্জন রায়, সাধারণ স¤পাদক ধনীর রঞ্জন রায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান এহসান চৌধুরী, আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান তালুকদার, আব্দুল কুদ্দুস, শিবলী আহমদ বেগ, রেজুয়ান খান, দিরাই প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সর্দার, অর্থ স¤পাদক সৈদুর রহমান তালুকদার।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উপজেলায় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে পুলিশ, র্যাব বিশেষ টহলে থাকবে। আপনারা নির্বিঘ্নে উৎসব উদযাপন করুন। সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। পূজায় যাতে কোনরকম বিশৃঙ্খলার ও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শুধু প্রশাসনের হস্তক্ষেপেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব নয়, যদি না আমরা সবাই সচেতন না হই। দিরাই উপজেলার অতীত ইতিহাস খুব গৌরবোজ্জ্বল। দিরাই-শাল্লায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে যা আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় ধরে রাখতে হবে। পূজা উদযাপনে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।