বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার, সজ্জন রাজনীতিবিদ পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে ইঙ্গিত করে ‘শিষ্টাচার বহির্ভূত’ বক্তব্য দিয়ে চরম বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। শনিবার বিকেলে দিরাইয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক শোকসভায় বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন তিনি।
ব্যারিস্টার ইমন বলেন, “আব্দুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বরুণ রায় প্রমুখের অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে সুনামগঞ্জ এগিয়ে চলে। সেখানে কেউ আমাদের দ্বিখণ্ডিত করতে পারবে না, বার বার চেষ্টা করার পরও। আওয়ামী লীগের একটি বড় দায়িত্ব নিয়ে আপনি মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। কিন্তু আপনার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগকে দ্বিখণ্ডিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তিনি দাবি করেন, “আমরা দেখেছি, আমাদের কাকাবাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওখানে আপনি গিয়েছেন। আপনার পশুদের প্রতি ভালবাসা থেকে আমি অনেকটা উৎসাহ পেয়েছি। আপনি কাকাবাবুর কুকুরের জন্যও বিস্কুট নিয়ে যেতেন। আগামীতে এই ভালবাসা মানুষের প্রতি নিয়ে আসেন। যাদের নিয়ে চলছেন, বিস্কুট খাওয়াচ্ছেন তাদের দিয়ে আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়ন হবে না।”
ব্যারিস্টার ইমন আরও বলেন, “আমরা বড় হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুকে একবারও টেলিভিশনে দেখতে পারি নাই। অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই দেশকে বার বার গোলাম আজম, আল-শামস এবং যারা ৭৫-এর পরবর্তী সময়ে উল্লাস করেছিল তাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করে আপনি সুনামগঞ্জের এই অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে কলুষিত করছেন।”
ইমনের এমন বিতর্কিত বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। তারা এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেন, “মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী আওয়ামী লীগের মঙ্গলের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি জেলার উন্নয়নের জন্য বহুমুখী ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক করে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের বিভক্তির কারণ পরিকল্পনামন্ত্রী না। বিভক্তির কারণ জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে তারা কোনও সভা আহ্বান করছেন না।”
তিনি আরও বলেন, “ছাতক-দোয়ারায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু জেলা থেকে যে নাম পাঠানো হবে এই ধরনের তৎপরতা নেই। আমি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আছি, কিন্তু এটা নিয়ে সেক্রেটারি সাহেব আমার সাথে কোনও আলোচনা করেন নাই। কাজেই আমি মনে করি জেলা আওয়ামী লীগকে দ্বিখণ্ডিত করার জন্য টোটালি সভাপতি ও সেক্রেটারি দায়ী।”
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে ইঙ্গিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনের দেওয়া বক্তব্যের নিন্দার পাশাপাশি বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান নূরুল হুদা মুকুট।