বিশেষ প্রতিনিধি ::
২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের তথ্য অনুযায়ী ওই সময় দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। করোনার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত এ হার ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। কিন্তু বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ ধরনের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দ্বিগুণ।
গত বৃহস্পতিবার ‘এক্সট্রিম পভার্টি: দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) যৌথভাবে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এর সঙ্গে আরও যুক্ত ছিল যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
আয় দারিদ্র্য ও বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ওপর পরিচালিত গবেষণার ফল প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রতিবেদনটির ওপর আলোচনা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন ও জুডিথ হার্বাসটন।
প্রতিবেদনটির ওপর প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এসএম জুলফিকার আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিইডির ভারপ্রাপ্ত সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ ফাতিমা ইয়াসমিন। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জুলফিকার আলীর প্রেজেন্টেশনে জানা যায়, আয় দারিদ্র্যের বিবেচনায় দেশে ২০১৬ সালে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী গণগোষ্ঠীর হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বহুমাত্রিকতার বিবেচনায় এ দারিদ্র্য হার ২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আয় দারিদ্র্য বিবেচনায় গত বছর করোনা সংক্রমণের আগ পর্যন্ত দেশে চরম দারিদ্র্যের শিকার জনগোষ্ঠীর হার ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হিসাব করার ক্ষেত্রে চারটি উপাদানকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- শিক্ষা, সাক্ষরতা, অপুষ্টি ও শিশুদের খর্বতা।
এসব বিষয় বিবেচনায় দেখা যায়, দেশের যেসব জেলায় আয় দারিদ্র্য বেশি, সেগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি মাথাপিছু আয়ের জেলাগুলোয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্যহার বেশি। আয় দারিদ্র্য বিবেচনায় দেশে সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্যের হার কুড়িগ্রাম জেলায়। জেলাটিতে চরম দারিদ্র্যের শিকার মানুষের হার ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে আছে সুনামগঞ্জ জেলা। এ জেলায় আয়ের বিবেচনায় চরম দারিদ্র্যের হার মাত্র ১৯ দশমিক তিন শতাংশ হলেও বহুমাত্রিকতার বিবেচনায় সেখানে দারিদ্র্যহার ৪৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। আয় দারিদ্র্যে কুড়িগ্রামের অবস্থান সব জেলার ওপরে থাকলেও বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের বিবেচনায় জেলাটির অবস্থান দ্বাদশ। জেলাটিতে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার জনগোষ্ঠীর হার ৩৪ দশমিক এক শতাংশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আয় দারিদ্র্যের বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বেশি হারে চরম দারিদ্র্যের শিকার কুড়িগ্রামের মানুষ। এখানে চরম দারিদ্র্য ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বান্দরবান জেলা ৫০ দশমিক তিন শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে দিনাজপুর জেলায় ৪৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে সবচেয়ে কম অতিদরিদ্র বাস করে নারায়ণগঞ্জ জেলায়, দ্বিতীয় নিম্ন অতি দারিদ্র্যের বাস মাদারীপুর এবং তৃতীয় মুন্সীগঞ্জ জেলায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুড়িগ্রাম জেলায় গুরুতর অসুস্থতায় ভোগে ৫৭ শতাংশ মানুষ। ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৬০ শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে মাত্র আট শতাংশ। দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিকসংখ্যা ৩৭ দশমিক দুই শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে ১৮ দশমিক এক শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, দারিদ্র্য আসলে কী জিনিস? এটি কি শুধু অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে, নাকি এর পেছনে গভীর কোনো বিষয় আছে, সেটি ভেবে দেখতে হবে। দারিদ্র্যহার কমছে, এটা যেমন স্বস্তির, তেমনি একজন লোকও যদি না খেয়ে থাকে, সেটা স্বস্তির বিষয় নয়। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের বিচারে দেখা যাচ্ছে সুনামগঞ্জ এক নম্বরে; মাথাগুন্তির দিক থেকে কুড়িগ্রাম। আগামীতে এ অবস্থা আর থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের দারিদ্র্য দৃশ্যমান বেশি হয়ে থাকে। এটা কী কারণে হয় জানি না। এমন হতে পারে আবহাওয়াগত কারণে লোকজন খোলা গায়ে থাকতে পছন্দ করে। কিংবা গামছা পরে থাকতে চায়। এ নিয়েও গবেষণা দরকার।
ড. শামসুল আলম বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের কাজ চলছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা দারিদ্র্য তিন শতাংশের মধ্যে অর্থাৎ শূন্যের কোঠায় নিয়ে যেতে চাই। নদীভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, নারীপ্রধান পরিবারে দারিদ্র্য বেশি। দেশে বৈষম্য আছে। সেটি কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মেগা প্রকল্পগুলোর একটি মেট্রোরেল ছাড়া বাকি সাতটিই গ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাই বলা যায়, দেশে দারিদ্র্যবান্ধব বিনিয়োগ হচ্ছে।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে দেশে দারিদ্র্যের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে দারিদ্র্যহারও কমছে। কিন্তু সেটি কমে গিয়েও ২০১৬ সালের অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ দেশের ২৫ শতাংশ লোক দরিদ্র। দেশে বৈষম্য যে প্রকট, সেটি দেখা যাচ্ছে কুড়িগ্রাম আর নারায়ণগঞ্জের অতিদারিদ্র্যের হারে পার্থক্য দেখে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশে নগর দারিদ্র্য আছে। কিন্তু সেটি ওইভাবে আলোচনায় আসে না। দারিদ্র্যবান্ধব সরকারি বিনিয়োগ আরও বেশি বেশি প্রয়োজন। যেমন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পাশাপাশি প্যাকেজ কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন। এই প্যাকেজে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা যুক্ত করতে হবে।
বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে শীর্ষে সুনামগঞ্জ
বিশেষ প্রতিনিধি ::
২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের তথ্য অনুযায়ী ওই সময় দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। করোনার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত এ হার ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। কিন্তু বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ ধরনের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দ্বিগুণ।
গত বৃহস্পতিবার ‘এক্সট্রিম পভার্টি: দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) যৌথভাবে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এর সঙ্গে আরও যুক্ত ছিল যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
আয় দারিদ্র্য ও বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ওপর পরিচালিত গবেষণার ফল প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রতিবেদনটির ওপর আলোচনা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন ও জুডিথ হার্বাসটন।
প্রতিবেদনটির ওপর প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এসএম জুলফিকার আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিইডির ভারপ্রাপ্ত সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ ফাতিমা ইয়াসমিন। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জুলফিকার আলীর প্রেজেন্টেশনে জানা যায়, আয় দারিদ্র্যের বিবেচনায় দেশে ২০১৬ সালে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী গণগোষ্ঠীর হার ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বহুমাত্রিকতার বিবেচনায় এ দারিদ্র্য হার ২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আয় দারিদ্র্য বিবেচনায় গত বছর করোনা সংক্রমণের আগ পর্যন্ত দেশে চরম দারিদ্র্যের শিকার জনগোষ্ঠীর হার ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হিসাব করার ক্ষেত্রে চারটি উপাদানকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- শিক্ষা, সাক্ষরতা, অপুষ্টি ও শিশুদের খর্বতা।
এসব বিষয় বিবেচনায় দেখা যায়, দেশের যেসব জেলায় আয় দারিদ্র্য বেশি, সেগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি মাথাপিছু আয়ের জেলাগুলোয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্যহার বেশি। আয় দারিদ্র্য বিবেচনায় দেশে সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্যের হার কুড়িগ্রাম জেলায়। জেলাটিতে চরম দারিদ্র্যের শিকার মানুষের হার ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে আছে সুনামগঞ্জ জেলা। এ জেলায় আয়ের বিবেচনায় চরম দারিদ্র্যের হার মাত্র ১৯ দশমিক তিন শতাংশ হলেও বহুমাত্রিকতার বিবেচনায় সেখানে দারিদ্র্যহার ৪৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। আয় দারিদ্র্যে কুড়িগ্রামের অবস্থান সব জেলার ওপরে থাকলেও বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের বিবেচনায় জেলাটির অবস্থান দ্বাদশ। জেলাটিতে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার জনগোষ্ঠীর হার ৩৪ দশমিক এক শতাংশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আয় দারিদ্র্যের বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বেশি হারে চরম দারিদ্র্যের শিকার কুড়িগ্রামের মানুষ। এখানে চরম দারিদ্র্য ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বান্দরবান জেলা ৫০ দশমিক তিন শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে দিনাজপুর জেলায় ৪৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে সবচেয়ে কম অতিদরিদ্র বাস করে নারায়ণগঞ্জ জেলায়, দ্বিতীয় নিম্ন অতি দারিদ্র্যের বাস মাদারীপুর এবং তৃতীয় মুন্সীগঞ্জ জেলায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুড়িগ্রাম জেলায় গুরুতর অসুস্থতায় ভোগে ৫৭ শতাংশ মানুষ। ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৬০ শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে মাত্র আট শতাংশ। দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিকসংখ্যা ৩৭ দশমিক দুই শতাংশ, যা জাতীয় পর্যায়ে ১৮ দশমিক এক শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, দারিদ্র্য আসলে কী জিনিস? এটি কি শুধু অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে, নাকি এর পেছনে গভীর কোনো বিষয় আছে, সেটি ভেবে দেখতে হবে। দারিদ্র্যহার কমছে, এটা যেমন স্বস্তির, তেমনি একজন লোকও যদি না খেয়ে থাকে, সেটা স্বস্তির বিষয় নয়। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের বিচারে দেখা যাচ্ছে সুনামগঞ্জ এক নম্বরে; মাথাগুন্তির দিক থেকে কুড়িগ্রাম। আগামীতে এ অবস্থা আর থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের দারিদ্র্য দৃশ্যমান বেশি হয়ে থাকে। এটা কী কারণে হয় জানি না। এমন হতে পারে আবহাওয়াগত কারণে লোকজন খোলা গায়ে থাকতে পছন্দ করে। কিংবা গামছা পরে থাকতে চায়। এ নিয়েও গবেষণা দরকার।
ড. শামসুল আলম বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের কাজ চলছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা দারিদ্র্য তিন শতাংশের মধ্যে অর্থাৎ শূন্যের কোঠায় নিয়ে যেতে চাই। নদীভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, নারীপ্রধান পরিবারে দারিদ্র্য বেশি। দেশে বৈষম্য আছে। সেটি কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মেগা প্রকল্পগুলোর একটি মেট্রোরেল ছাড়া বাকি সাতটিই গ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাই বলা যায়, দেশে দারিদ্র্যবান্ধব বিনিয়োগ হচ্ছে।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে দেশে দারিদ্র্যের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে দারিদ্র্যহারও কমছে। কিন্তু সেটি কমে গিয়েও ২০১৬ সালের অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ দেশের ২৫ শতাংশ লোক দরিদ্র। দেশে বৈষম্য যে প্রকট, সেটি দেখা যাচ্ছে কুড়িগ্রাম আর নারায়ণগঞ্জের অতিদারিদ্র্যের হারে পার্থক্য দেখে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশে নগর দারিদ্র্য আছে। কিন্তু সেটি ওইভাবে আলোচনায় আসে না। দারিদ্র্যবান্ধব সরকারি বিনিয়োগ আরও বেশি বেশি প্রয়োজন। যেমন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পাশাপাশি প্যাকেজ কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন। এই প্যাকেজে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা যুক্ত করতে হবে।