আশিস রহমান ::
দোয়ারাবাজার উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গোবিন্দগঞ্জ জোনালের অধীনে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছেন না। প্রতিদিনই সীমাহীন লোডশেডিং হচ্ছে। এরমধ্যে লোডশেডিং সমস্যার সমাধান না করেই উল্টো ভূতুড়ে বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের হাতে। এতে গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মিটার না দেখেই অফিস বসে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা হচ্ছে। এনিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলেও কোনো কাজ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানান, উপজেলার নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বোগলাবাজার, সুরমা, দোহালিয়া ও লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে সার্ভিস চার্জ, ভ্যাট ছাড়াও বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে প্রতি মাসে ১০ টাকা হারে মিটার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকা দিয়ে মিটার কিনে নেওয়ার পরও মাসে মাসে মিটার ভাড়া দিতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে সঠিকভাবে তদারকি করারও কেউ নেই। ঘনঘন লোডশেডিং তো হয়ই, এরমধ্যে বিদ্যুৎ লাইনে গোলযোগ দেখা দিলে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। তখন মোবাইলে যোগাযোগ করেও বিদ্যুৎ অফিসের কর্তাব্যক্তিদের পাওয়া যায় না। সমস্যায় পড়ে অফিসের সংশ্লিষ্টদের মোবাইল নাম্বারে কল দিলে অনেক সময় কল পর্যন্ত রিসিভ করেন না তারা।
উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের গুরেশপুর গ্রামের বাসিন্দা যোবায়ের মাহমুদ পাবেল বলেন, লোডশেডিং ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলে আমরা অতিষ্ঠ। এই গরমের দিনেও দিনের অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থাকেনা। কিন্তু মাস শেষে মিটারের রিডিং না দেখেই কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমি নিজে এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ অফিসে যোগাযোগ করেছি। অফিস জানিয়েছে করোনাকালে লকডাউনের সময় মিটার রিডিং না দেখে বিল তৈরি করা হয়েছিল। তখন একটু এদিক সেদিক হয়েছে।
নরসিংপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত মিটার রিডিং না দেখেই বিল তুলে দেওয়া হয়। ফলে কোনো মাসে বিদ্যুৎ বিল খুব কম আবার কোনো মাসে খুব বেশি আসে। আগস্ট মাসে আমার বিল আসে ৩৫০ টাকা, সেপ্টেম্বরে আসে ১৫৫০ টাকা। এক মাসেই এতোটা পার্থক্য! এরকম হলে বিদ্যুৎ ব্যবহার ছেড়ে দিতে হবে।
একই এলাকার গ্রাহক আব্দুস ছাত্তার, দেলোয়ার হোসেন, জামাল হোসেন ও সোহেল মিয়া বলেন, বিদ্যুৎ বিল নিয়ে আমাদের অভিযোগ এই প্রথম নয়। ব্যবহৃত ইউনিট না দেখেই অতিরিক্ত বিল তৈরি করা হয়, আবার বিল নিয়ে অভিযোগ করতে গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা এই সমস্যার প্রতিকার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসের ভিলেজ সুপারভাইজার নুসরাত জাহান বলেন, বিদ্যুতের মিটার বিক্রি করা হয়নি যার কারণে তার বিক্রয় মূল্য হিসেবে প্রতিমাসে ১০ টাকা মিটার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এবং গ্রাহকদের সঙ্গে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কখনও খারাপ আচরণ করেনি। তাছাড়া যেসব গ্রাহক অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ নিয়ে এসেছে অফিস থেকে তাদের সমস্যা সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। পুনরায় যেসব গ্রাহক অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ করেছে তারা হয়তো বিলের বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত নয়। অফিসে আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের সমস্যা সমাধান করে দেওয়া হবে।