স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওর-ভাটির আহমানকালের ঐতিহ্য নৌকাবাইচ। প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে প্রচেষ্টা হচ্ছে নানা প্রান্তে। তারই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও সংলগ্ন পাখিমারা হাওরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশাল নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগী ও দর্শকদের উৎসাহ দিতে দিনভর নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
জমজমাট এই নৌকাবাইচে উপভোগ করেন লক্ষাধিক নারী-পুরুষ। ভাদ্র মাসের তপ্ত দাবদাহ উপেক্ষা করে বাইচ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন তারা। কেউ নৌকায় আবার কেউ তীরে বসে উপভোগ করেন প্রতিযোগিতা। ঢোল-করতালের তালে তালে সারিগানের সুরের মূর্ছনায় বিমোহিত হওরের রঙবেরঙে সাজানো ‘খোলোয় নাও’। বৈঠার ঠানের সাথে ‘ওকি সাবাস সাবাস হেইয়ো’ ধুয়ায় সুর মিলান হাজারো দর্শক। মুহূমুর্হ করতালিতে উৎসাহ দেন প্রতিযোগীদের।
আয়োজকরা জানান, পাখিমারা হাওরে অনুষ্ঠিত নৌকাবাইচে জেলা ও জেলার বাইরের ১৭টি নৌকা অংশ নেয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মনির শাহ তরী, পঙ্খীরাজ, পবন, জলপবন, বাংলার তুফান, পবনকাষ্টের তরী, কুনুর শাহ তরী, হিজল তরী, বাংলার পবন, সোনার তরী, বীর পবন, বীর বাংলা ইত্যাদি।
দিনভর বাছাইপর্ব শেষে পড়ন্ত বিকেলে চূড়ান্ত পর্যায়ে অংশ নেয় ৬টি নৌকা। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও স্থান অধিকার করে ইনাথগঞ্জের নমির শাহ, শান্তিগঞ্জের হিজলতরী ও নবীগঞ্জের সোনার বাংলা।
প্রতিযোগিতা শেষে অতিথিদের নিয়ে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে সোনার নৌকা তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এ সময় তিনি বলেন, নৌকাবাইচসহ বাঙালির হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশের মধ্যদিয়েই কেবল একটি জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আল ইমরান রুহুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন নবী, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, ইউএনও আনোয়ার উজ জামান, ওসি কাজী মোক্তাদির হোসেন, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আকমল হোসেন, সাধারণ স¤পাদক রেজাউল করিম রিজু, সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হাসনাত হোসেন, প্রভাষক নূর হোসেন, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী শেখর ভদ্র, আবু বকর সিদ্দিক, শহীদনূর আহমেদ প্রমুখ।