1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

তিন যুগ ধরে বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র : সেবাবঞ্চিত ৫০ গ্রামের মানুষ

  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি ::
টাঙ্গুয়ার হাওর, মহালিয়া, কানামুইয়া, গুরমাসহ বেশ কয়েকটি হাওর দিয়ে চারপাশ ঘেরা এবং তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পাঠাবুকা অবস্থিত দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র। এর পাশে লামাগাঁও, সোলেমানপুর, ভবনীপুর, পণ্ডুব, ইন্দ্রপুরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে ৪০ হাজারের অধিক মানুষের বসবাস করলেও তারা গত তিন যুগ ধরে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত রয়েছেন। সুচিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না গর্ভবতী নারী, রোগাক্রান্ত শিশু ও বয়স্করা। বাধ্য হয়ে তারা গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার ও কবিরাজের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামগুলোতে বর্ষায় যাতায়াত বাহন নৌকা আর হেমন্তে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল অথবা হেঁটে। ওইসব গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবেই ১৯৬০ সালে চালু করা হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি। ১৯৮৪ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কোনো রকমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির কার্যক্রম চললেও সর্বশেষ ১৯৮৮ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এটি। এরপর থেকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ফলে বছরের পর বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত রয়েছেন ওই অঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, হাওর পাড়ি দিয়ে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমাদেরকে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়। এতে সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। তাছাড়া অনেকে নানা প্রতিকূলতা এবং অর্থ সংকটের কারণে কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারেন না। ফলে বাধ্য হয়ে গ্রামের বাজারের হাতুড়ে ডাক্তার ও কবিরাজের শরণাপন্ন হচ্ছেন সবাই।
সোলাইমানপুর গ্রামের তানভির আহমেদ, মোব্বাশিরসহ গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারা বলেন, এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে না স্থানীয়রা। অধিকাংশ মানুষ আর্থিকভাবে অসচ্ছল থাকায় উন্নত চিকিৎসার কথা তারা কল্পনাও করতে পারেন না।
পাঠাবুকা গ্রামের শাহ আলী জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটিতে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম প্রায় তিন যুগ ধরে বন্ধ। এর ফলে দুর্গম এই ইউনিয়নের গর্ভবতী নারী, রোগাক্রান্ত শিশু ও বয়স্করা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রটি চালু করতে দায়িত্বশীলদেরকে বার বার বলেছি, কোন লাভ হয়নি। এটি চালু হলে হাওরপাড়ের সবাই উপকৃত হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ভবন না থাকায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি বন্ধ আছে। ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এই উপজেলায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় সরকারিভাবে কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্যসেবা চালু করার জন্য চেষ্টা করব।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিরঞ্জন বন্ধু ধাম বলেন, পাঠাবুকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করা ও নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই ভবন অনুমোদন হয়ে আসবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com