পীর জুবায়ের ::
পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ যাবতীয় কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা এ দেওয়া হয়েছিল।
সরেজমিন দেখা যায়, জেলা শহরের রাজগোবিন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়, এসসি গার্লস হাইস্কুলসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় পাঠদানের উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যেন আগের মতো খেলাধুলা করতে পারে সে লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। এছাড়া শ্রেণিকক্ষের ভেতর জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর যাবৎ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন। ক্লাস এবং পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে। কতটুকু শিখল, সেটাও যাচাই করা যাচ্ছে না।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র সজিব দেব বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় আমাদের সবসময় ঘরে বা বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কাটাতে হচ্ছে। অলস হয়ে সবসময় ঘরে বেশি সময় থাকলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় গেলে আড্ডার ছলে বিপথগামী পথের দিকে চলে যাচ্ছি আমরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবর জেনে আমরা অনেক আনন্দিত হয়েছি। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পাঠদানের সুযোগ করে দিয়ে বিপথগামী পথ থেকে আমাদের রক্ষা করা।
হায়দরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আলী জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে আমরা বিদ্যালয়কে পাঠদানের উপযুক্ত করেছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় আশা করি খুব দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে দেয়া হবে।
সরকারি দিগেন্দ্র বর্মণ কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মশিউর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। এতে করে দেশে বাল্যবিবাহও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার কিছু শিক্ষার্থীরা মাদক এবং বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট গেমের প্রতিও আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই স্কুল-কলেজ খোলার পর শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানমুখী করা আমাদের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে। তাই যতদ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে দেয়া প্রয়োজন।
জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম সুনামকণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়ে আমরা সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দিয়েছি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রেণিকক্ষকে পাঠদানের জন্য উপযোগী করে তোলা। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সৃষ্টি হওয়া ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার জন্যও বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাঠদানের জন্য আমরা প্রস্তুত। উপর থেকে নির্দেশনা আসা মাত্রই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে দেয়া হবে।