1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরাঞ্চলে গড়ে উঠছে না কৃষিভিত্তিক শিল্প : নেই বিকল্প কর্মসংস্থান

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

হোসাইন আহমদ ::
খাদ্যশস্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার হাওর জনপদ- সুনামগঞ্জ। এখানে অপার সম্ভাবনা থাকার পরও গড়ে উঠছে না কৃষিভিত্তিক শিল্প। কৃষি কাজ ও মাছ ধরা ছাড়া বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় হাওরাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশকে বছরের প্রায় ৬ মাস বেকার সময় কাটাতে হয়।
অন্যান্য উপজেলার মতো শান্তিগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামের মানুষ বছরের ৩ মাস হাওরে কৃষি জমি চাষাবাদ, ১ মাস জমিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মাধ্যমে সোনালী ফসল ঘরে তুলে। পরে বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৯ মাস বেকার হয়ে পড়ে। বছরের ৬ থেকে ৭ মাস হাওর এলাকা বর্ষার পানিতে ভরপুর থাকে। এ সময় এলাকার কিছু লোক হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় বছরের ৯ মাসই তারা বেকার হয়ে পড়েন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আট ইউনিয়নে প্রায় ২ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। তন্মেধ্যে কৃষি পরিবারের সংখ্যা ২৯,২২৭টি। হাওরের কৃষি পরিবারগুলো একমাত্র বোরো জমির ফসলের উপর নির্ভরশীল। বছরের বৈশাখ মাসে কৃষকের গোলায় ধান উঠানোর পর এসকল পরিবারের আর কোন কাজ-কর্ম থাকে না। কাজ-কর্ম না থাকায় তাদের কোন উপার্জনও থাকে না। এতে কৃষক পরিবার তাদের গোলায় থাকা ধান বিক্রি করে সংসারের খরচ, আগামী বছরের কৃষিকাজের খরচ, কৃষিশ্রমিকের মজুরি, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচসহ যাবতীয় খরচ মেটাতে হয়। কৃষক পরিবারগুলো পরবর্তী বছরে বোরো মৌসুমের ধান কেটে ঘরে তোলার আগেই তাঁর এ ভাণ্ডার খালি হয়ে যায়। পাশাপাশি কৃষকের কৃষিকাজে ব্যবহৃত গবাদি পশুগুলোকে লালন-পালন করতে হয়। হাওরের কৃষক পরিবারের বাড়ির চারপাশে বর্ষার পানি থাকায় বসত ঘরের পাশে ছোট্ট টিন সেড বা খড়ের ঘরে আড় তৈরি করে গবাদি পশু বেঁধে রাখা হয় জুন-নভেম্বর মাস পর্যন্ত। এতে কৃষককে গবাদি পশুকে লালন-পালনে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়।
ডুংরিয়া গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন, হাওরে ৫ বিঘা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেছি। জমির অর্ধেক ধান জমির মালিককে দিয়েছি। বাকি ধান দিয়ে ৩ মাস সংসার চালানো যাবে। পরের মাসগুলো কিভাবে চলবো। এলাকায় কোন কাজ নাই। সবাই বেকার। সংসারে আয় থাকে না, বরং আরো ঋণগ্রস্ত হতে হয়।
সাংবাদিক কাজী জমিরুল ইসলাম মমাজ বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার কৃষকেরা কৃষি জমির উপর নির্ভরশীল। এখানে সারা বছর কৃষি কাজের সুযোগ নেই। কৃষক বছরে একবার ধান উৎপাদন করে আর সারা বছর সেই ফসলের ওপর নির্ভর করেন। বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত হাওরবাসী তেমন অভাবে থাকে না। কিন্তু কার্তিকের শুরু থেকে নতুন ফসল ওঠার আগ পর্যন্ত তাদের কষ্ট হয়। তাই কৃষক পরিবারের যুবকদের কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন সময় উপযোগী বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে স্থায়ীভাবে বেকারত্ব দূর করা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেন, হাওরাঞ্চলে যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। হাওরাঞ্চলে কাজের সুযোগটা খুবই কম। এখন গ্রাম-গঞ্জের মানুষ গবাদিপশু পালন, পোল্ট্রি ফার্ম, হাঁস পালন, মৎস্য খাত ও ফিসারির মাধ্যমে কাজ করছেন। আগের তুলনায় বেকারের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গ্রামের অনেক মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে। সুনামগঞ্জের অনেক লোকজন ঢাকায় গার্মেন্ট শিল্পেও কাজ করছে। কর্মসংস্থান আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আরও বৃদ্ধি হওয়া দরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার আগামী দিনে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যে সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, আশাকরি আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যে এর সুফল ভোগ করা যাবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com