স্টাফ রিপোর্টার ::
টাঙ্গুয়ার হাওর ও আশপাশের এলাকায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটক ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলে ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে প্রশাসন। হাওরের পরিবেশ রক্ষা, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, নৌ দুর্ঘটনা ও গণউপদ্রব রোধ এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মঙ্গলবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির এ নির্দেশনা জারি করেন।
এর আগে টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের বহনকারী নৌযানের চালক-মালিকদের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন ও থানার কর্মকর্তারা মতবিনিময় করেন। ইউএনও মো. রায়হান কবির জানান, এসব নির্দেশনার কিছু আগেও ছিল। আমরা মূলত পরিবেশের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কোনোভাবেই হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করা যাবে না। আবার পর্যটকদের নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিও দেখতে হবে। সবকিছুকে একটা শৃঙ্খলায় আনতেই এ উদ্যোগ।
ইউএনওর নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, হাওর কিংবা নদীতে যাত্রা শুরুর অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে নির্ধারিত ফরমে তাহিরপুর থানা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নৌযানের নাম, পর্যটকের সংখ্যা, যাত্রা ও ফেরার সময় উল্লেখসহ লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরে চলাচলকারী কোনো নৌযান অতিরিক্ত পর্যটক বা যাত্রী বহন করতে পারবেন না। ভ্রমণের সময় নৌযানের চালক ও পর্যটকদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। বিশেষ করে হাওরে কিংবা নদীতে কোনো পর্যটক লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নামতে পারবেন না। বিরূপ আবহাওয়া থাকলে হাওরে কিংবা নদীতে ভ্রমণ করা যাবে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভ্রমণের সময় সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিটি নৌযানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ডাস্টবিন স্থাপন করতে হবে। নির্ধারিত স্থান ছাড়া হাওর বা নদীর কোথাও ময়লা-আর্বজনা ফেলা যাবে না। পর্যটকবাহী নৌযানে উচ্চস্বরে মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিটি নৌযানে পর্যটকদের জন্য মানসম্মত পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ভ্রমণকালে পর্যটকেরা তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করবেন এবং নিজেদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর গত বছরের ১৯ মার্চ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিষোধাজ্ঞা জারি করা হয়। সম্প্রতি আবার সরকারি নির্দেশনায় পর্যটনস্থানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকেরা আসছেন। বছরের এ সময়টায় হাওরে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। পর্যটকের সমাগমে দিনরাত মুখর থাকে টাঙ্গুয়ার হাওর, হাওরপাড়ের শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), লেকের পাড়ে সবুজে মোড়া ছোট ছোট টিলা, টেকেরঘাট, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদ ও শিমুলবাগান।