1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

যাদুকাটা বাঁচিয়ে রাখছে জীবন-জীবিকা

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১

রাজন চন্দ ::
“আমরার মত অসহায় আর গরিব মাইনষের করোনায় কিচ্ছু হইতো না, কাম (কাজ) না করলে খানি নাই ভাই, উবাস (না খেয়ে) থাকমু কয়দিন? এর লাগি কপালে যেঢা আছে হেইডা অইব (যা হবার হবে) , তাই প্রত্যেকদিন কামে আই।”
মুখে মাস্ক আর মাথায় বালুর বোঝা নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন কাজ করতে আসা এক নারী শ্রমিক।
যাদুকাটা নদী এলাকায় সরেজমিনে কথা বলার সময় ওই নারী শ্রমিক জানান, তিনি নদী পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কলা চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বৃষ্টি রানী বর্মণ (২৮) নামে বিধবা ওই নারী শ্রমিকের বিয়ে হয়েছিল ৫ বছর পূর্বে। বিয়ের পর অবুঝ ছেলে সন্তানের বয়স যখন ৩ বছর, তখনই শারীরিক অসুস্থতায় মারা যান তার স্বামী।
স্বামীহারা অসহায় বৃষ্টি বর্মণের পরিবারে ৪ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান ব্যতীত আপন বলতে আর কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়েই নিজের আর অবুঝ শিশুর খাবার মিলাতে যাদুকাটা নদীতে বালু বোঝাইয়ের কাজ বেছে নেন তিনি। দিনভর বড় বড় বাল্কহেডে বালু বোঝাইয়ের কাজ করে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ টাকা উপার্জন করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেন।
শুধু বৃষ্টি বর্মণই নন, তার মতো আরও অনেকে এই কাজের সাথে যুক্ত। যাদুকাটা বালুমহাল খুলে দেয়ায় তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
নারী শ্রমিক বৃষ্টি বর্মণ জানান, একমাত্র অবলম্বন অবুঝ ছেলে সন্তানকে প্রতিবেশী লোকজনের কাছে রেখে নদীতে কাজ করতে আসেন তিনি। বৃষ্টি বর্মণ বলেন, যাদুকাটা নদী বালু মহালে কাজ করে হাজারো শ্রমিক বেঁচে আছে। নদীতে কাজ করতে না পারলে অর্ধাহারে-অনাহারে আমাদের থাকতে হতো। যাদুকাটা আমাদের বাঁচিয়ে রাখছে।
যাদুকাটা নদীতে বৃষ্টি বর্মণের সঙ্গে কাজ করতে আসা অপর আরেক শ্রমিক যতীন্দ্র বর্মণ বলেন, আমরা একই গ্রামের বাসিন্দা প্রতিদিন একসঙ্গে নদীতে বালু বোঝাইয়ের কাজ শেষে সন্ধ্যায় আমরা একসাথে বাড়ি ফিরে যাই। কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় আমরা খুশি।
এভাবে কঠোর পরিশ্রম শেষে কেমন কাটছে আপনার জীবন, এমন প্রশ্নের জবাবে বৃষ্টি বর্মণ জানান, কপালে লিখা ছিলো তাই হয়তো হয়েছে। অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়েছি। আমার একমাত্র সম্বল ছেলে সন্তানটিকে বড় করে মানুষের মতো মানুষ করতে পারলেই হলো। আমার আর অন্য কোনো চাওয়া নেই। নদীতে যেন কাজ সবসময় থাকে এটাই চাই। তাইলেই আমরার জীবন বাঁচবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com