সরকার সবসময় জনগণের কল্যাণ কামনা করে, জনগণের নিরাপত্তায় বদ্ধপরিকর। তাই বাধ্য হয়ে করোনার সংক্রমণের ধরণ পরিবর্তনের সাথে সাথে জনগণকে বাঁচানোর জন্য একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনী সরকারের নির্দেশে কঠোর, প্রশাসন ও সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে লকডাউনের বিধিনিষেধ মানাতে কাজ করছে। করোনা ভাইরাস যেভাবে গ্রাস করছে সবাই তাতে ভীতসন্ত্রস্ত।
করোনা থেকে জীবন রক্ষাকে শুধু প্রাধান্য দিলে চলে না, কারণ জীবন ও জীবিকা একসূত্রে গাঁথা। একটি ছাড়া আরেকটি অর্থহীন। বিশেষজ্ঞদের মতে কঠোর লকডাউনের পূর্বে সর্বস্তরের জনগণের জীবিকার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। বলতে গেলে অচল হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের কর্মসংস্থানগুলো। তবে করোনাভাইরাসের চলমান সংক্রমণের কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তায় গতকাল মঙ্গলবার ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৯ দিনমজুর, ২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩ পরিবহন শ্রমিক, ৫০ হাজার ৪৪৬ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ১ হাজার ৬০৩ নৌপরিবহন শ্রমিককে জনপ্রতি নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। মোট ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭০ জন উপকারভোগীর জন্য বরাদ্দ ৪৫৯ কোটি টাকা। শহর এলাকায় নিম্ন আয়ের জনসাধারণের সহায়তার লক্ষ্যে আগামী ২৫ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিন সারাদেশে ৮১৩টি কেন্দ্রে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বরাদ্দের আওতায় রয়েছে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ১৪ হাজার মেট্রিক টন আটা। এছাড়া ৩৩৩ ফোন নম্বরে জনসাধারণের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। গ্রামীণ এলাকায় কর্মসৃজনমূলক কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পিকেএসএফের মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ঋণ প্রদানের জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল, থিম পার্কের জন্য কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা প্রদানের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার এমন উদ্যোগের সুফল দেশবাসী পেয়ে যাচ্ছেন। নিন্দুকেরা বলেছিলেন- করোনাকালে দেশের অনেক মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। কিন্তু তাদের এই কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সরকার জীবন-জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখে জনগণের সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের উন্নয়নকাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও থেমে যায়নি। বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা করোনা মহামারী মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো। তাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখতে হবে। নিজেকে, পরিবারকে এবং দেশের সুরক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।