1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০২:৪৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওররক্ষা বাঁধে দুর্নীতি প্রতিরোধ : প্রশাসনিক দক্ষতাকে সততার সঙ্গে অভীষ্ট লক্ষ্যাভিমুখি হতে হবে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ, ২০২১

গতকাল বুধবার (২৪.০৩.২০২১) দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক সংবাদপ্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন তাহিরপুর উপজেলা কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার মাটিয়ান হাওরের আলমখালি বাঁধ ও বড়দল মিশিনবাড়ি বাঁধ পরিদর্শন’ করা হয়েছে এবং ‘পরিদর্শনকালে বাঁধের নিম্নমানের কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ’ করেছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। জানা গেছে, ‘এখনও বাঁধের কাজ শেষ হয় নি। বাঁশের আড়ে মাটির বস্তার পরিবর্তে মাটির বড় বড় চাকা দেওয়া হয়েছে। যা বৃষ্টি হলেই বাঁধটিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে। বাঁধে কোন দুরমুজ করা হয় নি।’
দেখেশুনে কর্তৃপক্ষ বরাবরে নেতৃবৃন্দ দাবি জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত যেসব বাঁধের কাজ শেষ হয় নি তাদের যেন কোন বিল না দেওয়া হয়।’ এবং ‘যে বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে, তার গুণগত মান পরীক্ষা করে দ্রুত বিল প্রদান’ করা হয়।
‘নিম্নমানের কাজ দেখে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের ক্ষোভ’ প্রকাশক সংবাদ প্রতিবেদনটিতে প্রকাশিত ক্ষোভের মতো প্রতিক্রিয়া এই দেশের সাধারণ মানুষ বরাবর প্রকাশ করে আসছেন সেই পাকিস্তান আমল থেকেই কেবল নয়, বরং বলা ভালো, সেই বৃটিশ আমল থেকেই। ঠিকাদারদের হাতে ন্যাস্ত করে দেওয়া যেকোনও সরকারি কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি, নিম্নমানের কাজ হওয়ার বিষয়টি একটি অবধারিত বিষয়ব্যাপার। বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন বাণিজ্যের আর্থনীতিক কর্মকাণ্ডের এটি একটি সাধারণ লক্ষণ। এমনটি হবেই এবং হতে থাকবেই। বন্ধ করে দেওয়ার বা প্রতিকার করার কর্তৃপক্ষীয় প্রতিশ্রুতি বার বার দেওয়া হবে এবং তা লঙ্ঘন করা হবে বরাবরের মতো। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এটাই বর্তমান উন্নয়ননীতি এবং এমনকি হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণের নীতিরও একমাত্র অভীষ্ট।
বাঁধ নির্মাণ ইত্যাদির মতো কাজে নির্ধারিত নীতি এই সত্যকেই প্রতিপন্ন করে যে, শত অভিযোগ করার পরেও কোনও প্রতিকার হবে না এবং পরবর্তীতে আবার দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি হবে। অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, এখন পর্যন্ত সব কর্ম সরকারি কাজে অবলম্বিত দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে দেশের প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে এবং দেশের মানুষের মধ্যে দুর্নীতির প্রতিকার না হওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষোভ বিদ্যমান আছে। কিন্তু ঔপনিবেশিক আমলের মতোই অপরিবর্তিত আছে আমাদের স্বাধীন দেশের প্রশাসন। এই প্রশাসন দেশের মানুষের কাছে বছরের পর বছর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে দুর্নীতি বন্ধের, কিন্তু প্রতিশ্রুতির আড়ালে দুর্নীতি চলছে আগের মতোই। প্রশাসন এই দুর্বলতাকে কাটাতে পারছে না শত চেষ্টা করেও। আমরা জানি ২০১৭ সালের শতভাগ ফসলহানির পরের বছর জেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় হাওররক্ষা বাঁধে দুর্নীতি শতভাগ প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল, যা প্রমাণ করে আমাদের দেশের প্রশাসনের দুর্নীতি প্রতিহত করার ক্ষমতা আছে। কথা হলো প্রশাসনিক ক্ষমতাকে দক্ষতা ও সততার সঙ্গে অভীষ্ট লক্ষ্যে পরিচালিত করতে হবে। প্রশাসন যদি জনগণের মাথার উপর প্রশাসনিক প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রাখে এবং প্রকারান্তরে প্রতিনিয়ত জনগণকে প্রশাসনের প্রতিপক্ষ করে তোলে, তাহলে দুর্নীতি বিস্তারের পথ অনিবার্যভাবেই প্রশস্ত হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com