১৪৪০ হিজরীর পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসকে জানাই মারহাবা, আহলান ওয়া সাহলান। রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন শরীফে ছুরায়ে বাকারা আয়াত নং- ১৮৩; যাহার অর্থ মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর (রমজানের) রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর, যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পার। এ মাসে পবিত্র কোরআন শরীফ নাজিল হয়েছে।
রমজান শরীফের মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ১০ (দশ) দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০(দশ) দিন মাগফিরাতের ও শেষ ১০(দশ) দিন নাজাতের। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলে পাক (সা.) এরশাদ ফরমাইয়াছেন, যে কেহ ঈমানের সাথে ও ছোওয়াবের নিয়তে রমজান শরীফের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সগীরা গোনাহ সমূহ মাফ করা হবে এবং সে ঈমানের সাথে ছোওয়াবের নিয়তে রমজানের মাসে রাতে ইবাদত (নামাজ) কাটাবে তার পূর্বের গোনাহ সমূহ মাফ করা হবে। আর যে ঈমানের সাথে সওয়াবের নিয়তে ক্বদরের রাতে ইবাদতে কাটাবে, তার পূর্বকৃত গোনাহ সমূহ মাফ করা হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)। আরো বর্ণিত আছে যখন রমজান শরীফের প্রথম রাত আসে, শয়তান ও অবাধ্য জ্বীন সকলকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। দোজখের দরজা সমূহ বন্ধ করা হয় উহার কোন দরজাই খোলা হয় না এবং বেহেশতের দরজা সমূহ খোলা হয়, উহার কোন দরজাই বন্ধ করা হয় না। এ মাসে এক আহ্বানকারী আহ্বান করতে থাকে, হে ভালোর অন্বেষণকারী অগ্রসর হও, হে মন্দের অন্বেষণকারী থেমে যাও। আল্লাহপাক এ মাসে বহু ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন, আর এটা প্রত্যেক রাত্রিতেই হয়ে থাকে। (তিরমিযি) রোজাদারগণ আল্লাহর মেহমান। রোজার বদলা স্বয়ং আল্লাহপাক নিজ কুদরতের হাতে দান করবেন। ছোবাহানআল্লাহ।
আমাদের করণীয় ও বর্জনীয় কাজ সমূহ। পবিত্র রমজানুল মোবারকের প্রতিটি দিনে রোজা রাখা ও তাহার পবিত্রতা রক্ষা করা। প্রতি রাত্রিতেই তারাবিহর ২০ বিশ রাকাত নামাজ জামাতে আদায় করা। তাহাজ্জতের নামাজ, কিয়ামূল লাইল আদায় করা।
ইফতার, সেহরীর ব্যবস্থা করা, গরিব দুঃখী অসহায় মানুষকে অন্ন, বস্ত্র, যাকাত, ফিতরা, দান, সদকা বেশি বেশি করা। মিথ্যা অন্যান্য পাপাচার থেকে বিরত থাকা। কোরআন শরীফ তেলাওয়াত, জিকির আজকার, তছবীহ, তাহলীল, মোরাকাবা, মোশাহাদায় নিমগ্ন থাকা। কারণ এ মাসে একটি নফল ইবাদত অন্যান্য মাসের ফরজ সমতুল্য ছোওয়াব। পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা আমাদিগকে পবিত্র রমজান শরীফের মাসের পূর্ণাঙ্গ ছওয়াব অর্জনের জন্য সারা মাস ইবাদত বন্দেগীতে কাটার তৌফিক দান করুন। আমিন। ছুম্মা আমিন।
[মাওলানা কাজী শাহেদ আলী (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত) অবসরপ্রাপ্ত সুপার, ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদরাসা, মীরেরচর, মঙ্গলকাটা, সুনামগঞ্জ]