সুনামগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদারকে অশেষ ধন্যবাদ। তিনি সংসদ সদস্য অ্যাড. শামীমা শাহরিয়ারের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শামীমা শাহরিয়ার হাওরাঞ্চলের কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে বোরো ধান ক্রয়ের বিষয়ে মন্ত্রী বরাবরে জানতে চেয়েছিলেন।
প্রতিবছর বোরো ধান সরকারিভাবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয়ের সরকারি ঘোষণা ঠিকই দেওয়া হয়ে থাকে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সে-ঘোষণা কার্যকর হয় না এবং কার্যকর হলো কি না সে-বিষয়টিও দেখভাল করার কেউ থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই কৃষকরা দালাল-ফড়িয়াদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে ধান বিক্রয় করতে বাধ্য হয় এবং উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে ধান বিক্রয় করে লোকসানের মুখে পড়ে। কৃষকের সঙ্গে প্রতি বছর এই প্রতারণা করা হচ্ছে এবং প্রকারান্তরে কৃষক দিনে দিনে নিঃস্ব হচ্ছে। স্বচ্ছল কৃষক গরিব কৃষকে, গরিব কৃষক ভূমিহীন ক্ষেতমজুরে এবং ক্ষেতমজুর উদ্বাস্তু শ্রমিক কিংবা ভিক্ষুকে পরিণত হচ্ছে। অপরদিকে দেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হয়ে বসে আছে। একদিকে সম্পদের পাহাড় ও অন্যদিকে সর্বহারা মানুষের সংখ্যাস্ফীতি, আয়বৈষম্যের এই বিষদৃশ অর্থনীতির বিকাশ এখনই থামানো দরকার। আর এর প্রাথমিক সূত্রপাত হতে পারে কৃষকের ফলানো ধানের ও অন্যান্য ফসলের উচিতমূল্য কৃষকের হাতে তোলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। আর এটা নিশ্চিত করতে হলে কৃষক ও সরকারের মাঝখানে এক শ্রেণির দালাল ও ফড়িয়ার আবির্ভাবকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
শামীমা শাহরিয়ারের প্রশ্নের উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘২৬ টাকা দরে মাঠ পর্যায়েই বোরো ধান ক্রয় করা হবে, এর ব্যতিক্রম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মন্ত্রীর কথায় আমরা সুনামগঞ্জবাসী আশ্বস্ত হয়েছি এবং আশা করছি এবার বোরো ধান ক্রয়ের সময় ফড়িয়া চক্র আবির্ভূত হলে সে-চক্রকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিহত করা হবে এবং এ ব্যাপারে হাওরবান্ধব ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’-এর কাছে দাবি থাকবে তাঁরা যেন এ ব্যাপারে সক্রিয় থাকেন, সক্রিয় থেকে প্রশাসনকে ফড়িয়া চক্র দমনে সক্রিয় করে তোলেন।