1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:২৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

এমপিদের আলাদা লাইনে তল্লাশি : আইনবিরোধী কর্ম প্রতিরোধের বিকল্প নয়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৯

একটি খবর থেকে জানা যায়, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পিস্তলসহ ধরা পড়ার পর সেখানে যাত্রীরা ব্যাপক তল্লাশির মধ্যে পড়ছেন। দৈবক্রমে ঘটা এই ঘটনা যেমন দেশবরেণ্য শিল্পীর ক্ষেত্রে মানানসই নয় তেমনি এই ঘটনাপরবর্তী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্তব্যস্বরূপ অবলম্বন করা কার্যক্রম (তল্লাশিতে কড়াকড়িত্বের আরোপ) অনেকের জন্যে সত্যিকার অর্থেই ঝামেলার কিন্তু অপরাধ প্রতিরোধের বৃহত্তর স্বার্থে অবশ্যই করণীয় দেশপ্রেমিক কর্তব্য। এই তল্লাশিতে কোনওরূপ ছাড় দেওয়া বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে কোনও কর্তব্য হতে পারে না।
আক্ষরিক অর্থেই বাস্তব অবস্থা অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও যে-কারও জন্যে অনভিপ্রেত এবং তিনি যদি একজন সংসদ সদস্য হন, তবে তো আর কোনও কথাই নেই। বিমানবন্দরে তল্লাশি নাকি এতটাই কড়া যে, যাত্রীদের বেল্ট ও মোজা খোলতে হচ্ছে এবং অনেক সময় পোষাকও। তল্লাশির এই কড়াকড়ি থেকে সংসদ সদস্যরা পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছেন না। সংসদ সদস্যরা তাঁদের ক্ষেত্রে তল্লাশিতে ব্যাপক কড়াকড়ি তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং সংসদ সদস্যদের জন্য আলাদা লাইনে তল্লাশির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করেছেন, তাঁরা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে এক লাইনে দাঁড়াতে রাজি নন। কিন্তু রাজনীতিবিজ্ঞান ও যৌক্তিক রাজনীতিক বিবেচনায় একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য এই যে, রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক দেশের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের বা জনগণের চেয়ে বড় কেউ নেই। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ যে লাইনে দাঁড়িয়ে তল্লাশির ধকল সহ্য করেন সে লাইন থেকে আলাদা হতে না চেয়ে জনগণের সঙ্গে ধকল সহ্য করার ভাগ নেওয়াটি কি এমপিদের পক্ষে অধিকতর বিবেচনা প্রসূত নয়? এমপি হয়ে তাঁরা কি ভুলে যান যে, এই জনগণই তো তাঁদেরকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছেন? তারপরেও কথা থাকে যে, ইলিয়াস কাঞ্চনকে অসচেতন, অসংস্কৃত ও অপরাধী কোনও মানুষ ভাবা আমজনতার পক্ষে কী করে সম্ভব বরং আমজনতা তাঁকে আদর্শ মানুষই মনে করেন এবং আমজনতার মনে এমপিদের সম্পর্কেও তেমনি একটি সম্মানের ভাবমূর্তি বজায় আছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। অথচ ইলিয়াস অস্ত্রসহ তল্লাশিতে ধরা পড়েছেন। এমতাবস্থায় কেউ যদি মনে করেন যে, এমপিদের উচিত প্রথমে রাষ্ট্রটিকে এমন একটি অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাতে আমজনতাকে বিমানবন্দরে এই কড়াকড়ি তল্লাশির সম্মুখীন হতে না হয় এবং এতে করে এমপিরা নিজেরাও আমজনতার মতোই তল্লাশি থেকে স্বাভাবিকভাবেই রেহাই পেতে পারেন। তাঁরা কেন মাঝপথে আলাদা লাইনে তল্লাশির সম্মুখীন হওয়ার অপমানকর বাস্তবতাকে স্বীকার করে নেওয়ার পথে পা বাড়াতে যান, বোধগম্য নয়। আমজনতা থেকে পৃথক হয়ে আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে তল্লাশির মুখোমুখি হওয়া সত্যিকার অর্থে ও গভীর বিবেচনায় এমপিদের জন্য কোনও সম্মানের বিষয় হতে পারে না।
ইলিয়াস কাঞ্চন যদি অস্ত্রসহ বিমানবন্দরে তল্লাশিতে ধরা পড়েন এবং তৎপরে বিমানবন্দর এমপিদের তল্লাশি করতে কড়াকড়ি আরোপ করে থাকে তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে দোয়ারোপ করা সঙ্গত হবে কি? তাঁরা তো কোনও ভুল করছেন না, বরং আইনি দিক থেকে ঠিকই করছেন। জনগণ থেকে আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে তল্লাশির সম্মুখীন হওয়া তো আইনবিরোধী কর্ম প্রতিরোধের কোনও বিকল্প হতে পারে না। আর যদি জনগণকে ধকলের মধ্যে রেখে অর্থাৎ আগে জনগণের ধকল নিরসন না করে আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে সে-ধকল থেকে রক্ষা পেতে চান তবে এমপিদের সে-প্রচেষ্টা হবে তাঁদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার নীতির প্রতি পিছন ফিরে থাকার অগণতান্ত্রিক ও অসংসদীয় আচরণের নামান্তর।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com