1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯

গতকাল দিরাই-শাল্লার ছয় বীরাঙ্গনাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা জেলা প্রশাসনকে এই মহৎ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
যে-কাজটা আমাদের করার কথা ছিল আজ থেকে বলতে গেলে ৪৭ বছর আগে, সেটা আমরা করছি ৪৭ বছর পর। এই কাজটা করা থেকে আমাদেরকে বিরত রাখতে আমাদের মধ্য থেকে এক শ্রেণির লোক উঠেপড়ে লেগেছিল এবং এখনও লেগেই আছে। যেহেতু তারা এই বীরাঙ্গনাদেরকে বীরাঙ্গনা বানিয়েছিল। তারা তাদের পাপ স্বীকার করতে চায়নি, বরং সে-পাপকে ঢাকা দিতে চেয়েছে। এমনকি এই পাপকে ঢাকা দিতে চেয়ে তারা একসময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতার গদি পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিল। এখনও তারা তাদের যুদ্ধাপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি নয়। অর্থাৎ সার্বিক বিবেচনায় জাতি হিসেবে আমরা কতোটা পিছিয়ে আছি ৪৭ বছর পর বীরাঙ্গনাদেরকে সম্মাননা প্রদানের বাস্তবতা তার জলজ্যান্ত সাক্ষী। ঐতিহাসিক এই ঘটনাপ্রপঞ্চকে কিংবা জটিলতাকে কেউ ‘গাধা জল ঘোলা করে দিয়েছিল’ বলে ভাবতেই পারেন এবং বলতে গেলে একদিকের বিবেচনায় সেই জলটা এখনও ঘোলাই আছে।
অনুষ্ঠানে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ারও ছিলেন। সংসদ সদস্য মানেই সার্বিক বিবেচনায় তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে সামাজের দায়িত্বশীল একজন মানুষ। এই একই দিনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অন্য একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্য, বাল্যবিবাহ, ধর্ষণসহ সকল প্রকার দুর্নীতি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে নারীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। নারীদেরকে শুধু নারী নয়, মানুষ হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে হবে।’ তাঁর বক্তব্য বর্তমানের যে-সমাজবাস্তবতাকে তোলে ধরে তার সঙ্গে তুলনায় ৪৭ বছর আগের বীরাঙ্গনাদের ধর্ষিত হওয়ার বাস্তবতা আক্ষরিক অর্থেই সমার্থক এবং মুক্তিযুদ্ধকালে সমাজে যে-বিপন্নতার উদ্ভব ঘটেছিল এখনকার সামাজিক বাস্তবতা প্রকারান্তরে সে-বিপন্নতাকেই প্রতিপন্ন করে। এখনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। নারীকে আটকে রাখা হয়, আটকে রেখে দিনের পর দিন গণধর্ষণ করা হয়। সমাজ নির্বিকার থাকে। সমাজের একাংশ নারীর বিপক্ষে অর্থাৎ ধর্ষকের পক্ষে আনুগত্য প্রকাশ করে, যেমন একাত্তরে এই দেশের রাজাকাররা হানাদার ধর্ষকদের পক্ষাবলম্বন করেছিল। এ থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিপন্ন হয় যে, সমাজ এক কদম এগিয়ে নেই বরং একাত্তরের সমান্তরাল পর্যায়েই অবস্থান করছে। ৪৭ বছর আগে নারীরা যেমন ধর্ষিত হয়েছিল হানাদার ও হানাদারদের এ দেশীয় সহযোগীদের দ্বারা, এখনও তেমন পিছিয়ে পড়া অবস্থানেই আছে। বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিকতার পরিসরে নারীরা একাত্তরের মতো এক ধরনের যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই আছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশকে তোলে দিতে পারলেও নারীর সামাজিক সুরক্ষার উন্নয়নের পালে অগ্রগতির হাওয়া দিতে পারা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সরকারকে অবশ্যই নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আরও বেশি তৎপর হতে হবে কথায় ও কাজে। এবং এই ‘কাজে’ অর্থে নারীকে আর্থনীতিকভাবে অবশ্যই ক্ষমতায়ন করতে হবে, অন্যথায় নারীসুরক্ষার সকল কথা অন্তঃসারশূন্য কথায় পর্যবশিতই থেকে যাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com