1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নারীবিরোধী আর্থব্যবস্থাকে পাল্টাতে হবে নারীর সামাজিক ক্ষমতায়নের অনুকূলে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৯

পৃথিবীতে ব্যক্তিগত সম্পত্তির উদ্ভবের সঙ্গে নারীর জীবন নিয়ন্ত্রণের লাগাম তৈরি হয়েছে এবং প্রকারান্তরে মানবতন্ত্রের সামাজিক প্রপঞ্চের ভেতরে তৈরি করেছে পুরুষতান্ত্রিকতার পরিসর। পুরুষতন্ত্রের প্রতিনিধি পিতার পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে পিতৃত্ব নির্ধারণ সমাজে অনিবার্য হয়ে উঠে এবং এই ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে নারীর আর্থনীতিক স্বাধীনতা খর্বিত হয়ে নারীসমাজ সমাজের মধ্যে পুরুষের অধঃস্তন অবস্থানে অধিষ্ঠিত হয়। এই অধঃস্তনতা প্রকৃতপ্রস্তাবে মূলত একটি আর্থনীতিক কর্মকা-ের সাংস্কৃতিক পরিণতি মাত্র। যা এখন পর্যন্ত কা-সহ শাখাপ্রশাখা ও পত্রপুষ্পে বিপুল বিস্তৃতি লাভ করেছে। বিশ্ব পরিসরে ঘটছে নারী অধিকার খর্ব করতে বিভিন্ন মাপ-মাত্রা-ধরনের অবিমৃষ্যকর ঘটনা এবং তারই পরিণতিতে বাংলাদেশের পরিসরে কোনও একটি সংবাদের বিবরণীতে পড়তে হচ্ছে, ‘আশুলিয়ায় গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ’। ঘটনাটি গত দু’দিন আগের ৬ মার্চের।
বাংলাদেশেই কেবল নয়, নারী স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে পৃথিবীর প্রতিটি ভূখ-ে। যেমন গত ৪ মার্চে সংঘটিত তামিলনাড়–র একটি ঘটনার সংবাদশিরোনাম করা হয়েছে, ‘কিশোরীকে ৪ দিন আটকে রেখে লাগাতার ধর্ষণ জামাইবাবুর’ এবং ৬ মার্চ ওড়িষার বালেশ্বরে কিশোরী ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে পৌঢ় গৃহশিক্ষক। এতো গেলো নারীর উপর শারীরিক আক্রমণের নৃশংসতার কয়েকটি উদাহরণ। অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর প্রমাণ মুছে দিতে নারীকে হত্যা পর্যন্ত করা হচ্ছে নির্দ্বিধায়। আর নারীপাচারের আন্তর্জাতিক ব্যবসার তো বিশ্বজুড়ে রমরমা অবস্থা। বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি দেশে খতরনাক পুঁজিবাদী আর্থসামজিক ব্যবস্থা নারীকে প্রকৃতপ্রস্তাবে একটি পণ্যের চেয়ে বেশি কীছু মর্যাদা দিতে পারছে না। বিশ্বজুড়ে এই পুঁজিবাদী অর্থনীতি নারী ও পুরুষের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করেছে এবং প্রকারান্তরে নারী শোষণের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্র হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে ১৮৫৭ সালে ৮ মার্চ তারিখে নিউইয়র্কের এক সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্য, শ্রমঘণ্টা নির্ধারণ, কাজের অস্বাস্থ্যকর ও অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় মিছিল করে, সরকার তাদেরকে লাঠিপেটা করে। এই ঐতিহাসিক ঘটনাই বিশ্বে নারীর সার্বিক অধিকার আদায়ের রাজনীতিক আন্দোলনের সূত্রপাত করে। বর্তমানে যা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পর্যবশিত হয়েছে। এখনও এই নারী আন্দোলনের সারকথা হলো, সামগ্রিকভাবে সকল আর্থসামাজিক অধিকারে নারী ও পুরুষের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য নিরসন করা। সম্পত্তিতে পুরুষের সমান অধিকারসহ ভোটধিকার ও প্রজননের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং লিঙ্গবৈষম্য, আইনবৈষম্য, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন বর্তমান বিশ্বের দেশে দেশে উত্তরোত্তর বিস্তৃত ও তীব্র আকার ধারণ করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নারী সমাজ নারীঅধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ক্ষেত্রে সার্বিক বিবেচনায় পিছিয়ে আছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এখানে নারীর স্বাধীনতার পথিকৃতদের একজন অতিক্ষুদ্র উত্তরসূরি তসলিমা নাসরিনকে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, বেশ ক’বছর আগে। এই দুরবস্থা থেকে নারীদেরকে তখনই রক্ষা করা যাবে, যখন আর্থনীতিকভাবে সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমান পুঁজিবাদী আর্থসামজিক ব্যবস্থাকে বজায় রেখে সেটা কোনও দিনই সম্ভব হবে না, নারীবিরোধী এই আর্থব্যবস্থাটিকে অবশ্যই পাল্টাতে হবে নারীর সামাজিক ক্ষমতায়নের অনুকূলে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com