1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

যে-টুকু সময় আছে সে-সময়ের মধ্যেই বাঁধের কাজ শেষ করুন

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৯

শাল্লায় পিআইসি গঠন নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ইতোমধ্যে এ সম্পর্কে জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে : গঠিত পিআইসি কমিটি প্রভাবশালী কোনও এক ব্যক্তি স্থানীয় সাংসদের দুহাই দিয়ে নতুন কমিটি করেছেন এবং সে কমিটিতে ভূমিহীন ও হাওরে যার জমিই নেই তাকে সদস্য করা হয়েছে এবং সময়মতো কাজ না করে বিলম্বে কাজ শুরুর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। দেরি হলে বৃষ্টি শুরু হবে এবং বৃষ্টি শুরু হলে কাজ না করেই কাজের টাকা মেরে দেওয়ার মওকা পাওয়া যাবে। এই মওকা পাওয়ার আশায়ই থাকেন দুর্নীতিবাজরা।
গতকাল রবিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ফসলরক্ষাবাঁধ মনিটরিং কমিটির সভা হয়ে গেছে। সেখানে ‘পাউবো’র পক্ষ থেকে ৩৩২টি বাঁধে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অথচ ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’-এর উপজেলা প্রতিনিধিদের তথ্যানুসারে ‘পাউবো’র উপস্থাপিত তথ্য সঠিক নয়। উক্ত সভায় ‘পাউবো’র তথ্যপ্রতারণার প্রতিবাদ করা হয়েছে। দুয়েকটি বাঁধে কাজ শুরু হয়েছে এটা যেমন সত্য তেমনি ৩৩২টি বাঁধে কাজ শুরু হয়নি সেটাও সত্য। ৩৩২টি বাঁধে কাজ শুরু হয়েছে মর্মে যে-তথ্য পাউবো প্রতিস্থাপন করেছে তা কাগজে কলমে সত্য হলেও বাস্তবে সত্য নয়, বরং সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসলে ‘পাউবো’ পরিবেশিত এ-তথ্য (৩৩২টি বাঁধে কাজ শুরুর হয়েছে) দিয়ে জেলা প্রশাসনকে ভুল বুঝানো হচ্ছে এবং প্রকারান্তরে বাস্তবায়িত হচ্ছে বাঁধনির্মাণ কাজের বরাদ্দকৃত টাকা হাতানোর মতলব চারিতার্থকরণ। হাওররক্ষাবাঁধ নির্মাণকাজে নিয়োজিত হয়ে জেলা প্রশাসনের এইভাবে প্রতারিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। ‘পাউবো’র মিথ্যাতথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে জেলাপ্রশাসনের উচিত ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’-এর অভিযোগগুলোর সত্যমিথ্যা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া। গত দুই বছরে হাওররক্ষাবাঁধ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আক্ষরিক অর্থেই হাতে কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন অতীতে আসলেই বাঁধনির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাছাড়া বাঁধনির্মাণকাজ বিলম্বে শুরু করে ফসলহানির বিপদ ডেকে আনার দায়দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়ারও কোনও প্রয়োজন দেখি না। হাওররক্ষাবাঁধ নিয়ে কোথায় কী হচ্ছে খুঁটিনাটি সবকীছু জেলা প্রশাসনের জানা দরকার। বুঝা দরকার যে, যে-সময় অবশিষ্ট রয়েছে সে-সময়ের ভেতরে বাঁধনির্মাণের কাজ শেষ করা সম্ভব কী না। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা হলো তা সম্ভব হবে না এবং সম্ভব না হলে ফসলহানির বিপদের মাত্রা ব্যতিক্রম বাদে শতভাগের চেয়েও বেশি। সুতরাং স্বল্প সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার প্রয়োজনে আলগা প্রযত্নের প্রয়োজন আছে, সে-ব্যবস্থাটা জেলা প্রশাসনকে করতে হবে এবং ব্যর্থ হলে চলবে না। যে-টুকু সময় আছে তার মধ্যেই যে-করেই হোক বাঁধনির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতার অর্থই হলো জেলার বোরো ফসল জলের তলে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সত্যি হয়ে উঠা। প্রকৃত সত্য না জানতে পারলে কী করতে হবে সেটা বুঝা যাবে না। বিভিন্ন সূত্র হতে পাওয়া বা পরিবেশিত তথ্য যাচাই বাছাই করা দরকার। সেগুলোর ভেতরে প্রতারণার বীজ রোপণ করা থাকতে পারে। বর্তমান জেলা প্রশাসকের উচিত আগের জেলা প্রশাসক হাওররক্ষাবাঁধ নির্মাণের কাজে সফলতা অর্জনে যে-নীতির ভিত্তিতে কাজ করে ছিলেন সে-নীতি অনুসরণ করা। অন্যথায় তাঁর সফলতার সম্ভাব্যতা হ্রাস পাওয়াসহ নিজের প্রশাসনিক ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হওয়ারও আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে। জেলা প্রশাসকের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হোক এটাই আমাদের একান্ত কাম্য।
ভুলে গেলে চলবে না যে, অতীতে পাউবো, ঠিকাদার ইত্যাদিরা ফসলরক্ষাবাঁধ নিয়ে যে-সব কা- করে গেছেন সে-গুলো জেলাবাসীকে অন্তত একটি বিষয়ে জ্ঞান দান করেছে যে, বাঁধ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি তখন করা হয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বর্তমানেও এমন দুর্নীতির চর্চা অব্যাহত থাকুক জেলাবাসীর সেটা কোনওভাবেই কাম্য নয়। ‘পাউবো’র প্রতিনিধিরা ও ঠিকাদাররা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এখন রাতারাতি তারা ভালো হয়ে গেছেন এবং সত্য তথ্য উপস্থিত করছেন ‘পাউবো’র লোকেরা এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। জেলাপ্রশাসনকে এটা মানতে হবে এবং মেনেই কাজ করতে হবে, যদি হাওররক্ষার কাজে কিংবা বোরো ফসলহানির দুর্বিপাক থেকে সুনামগঞ্জকে রক্ষা করতে চান। বাঁধের বরাদ্দের টাকা কতিপয়ের পকেটে তোলার স্বার্থ রক্ষার্থে সমগ্র জেলাবাসীকে তথা দেশকে দুর্গত করে তোলার মধ্যে কোনও মহত্ব নেই, বরং আছে দেশপ্রেমহীনতা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com