1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শিক্ষার উন্নতি ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা ব্যতীত উন্নয়ন অর্থবহ হতে পারে না

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৯

গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, ‘প্রাথমিকে পদ ১৩ হাজার, আবেদন ২৪ লাখ।’ এখানে ‘প্রাথমিকে’ মানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৩ হাজার ১০০টি পদে ২৪ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এই পরিসংখ্যানটি শিক্ষা অধিদপ্তর কিংবা গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কেবল প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, এর স্বরূপ বিশ্লেষণ করা হয়নি। অর্থাৎ এই পরিসংখ্যানটি প্রকৃতপ্রস্তাবে কোনও আর্থসামাজিক বাস্তবতাকে প্রকাশ করে কি-না সে-সম্পর্কে কোনও অভিমত কিংবা প্রত্যাশিত বিবরণ-বিশ্লেষণ প্রকাশ করে না। এ সম্পর্কে শিক্ষা অধিদপ্তর ও গণমাধ্যম দু’পক্ষই একরকম ‘নীরবতা সম্প্রতি সতর্ক অ্যাম্বুস’ নীতির অবলম্বী। এই নীরবতা অবলম্বনের সৌজন্যে সাধারণ মানুষ দেশে বেকারত্ব নামক ব্যাধিটি কতোটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সে-সম্পর্কে কোনওই ধারণা লাভ করতে পারছে না। সংবাদ পাঠ করে মনে হয় বিষয়টা এমন যে, এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার, তেমন-কীছু-নয়-ধরনের মামুলি বিষয় এবং এমন তো হতেই পারে এবং হওয়াটাই স্বাভাবিক এবং এটা নিয়ে ভাববার কীছু নেই।
কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখলেই অনায়াসে বুঝা যায় যে, দেশে বেকারত্ব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। কেবল শিক্ষক হতে প্রত্যাশী অর্থাৎ শিক্ষাক্ষেত্রে ২৪ লাখ শিক্ষিত লোক বেকার বসে অন্ন ধ্বংস করে তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বেকারত্বের অবস্থাটা কী? এর একটি তাৎপর্যপূর্ণ নিহিতার্থ হতে পারে : ২৪ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র ১৩ হাজারকে চাকরি দিলে ১৩ হাজার কম ২৪ লক্ষ মানুষই বেকার থেকে যায়। এটি অনেকটা সমুদ্র থেকে ১৩ ফোঁটা পানি কমানোর মতো একটি ব্যাপার, অর্থাৎ অবস্থার কোনও পরিবর্তন না হওয়া। একবার কল্পনা করুন, এই বেকাররা একত্রিত হয়েছে, একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করেছে, সেটা কেমন হবে? বিশ্ব কী ভাববে? হতভম্ব হয়ে যাবে কি? বেকারত্বের সমস্যাটি প্রকৃতপ্রস্তাবে দেশের মানুষদের মধ্যে আয়বৈষম্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধানের অমীমাংসিত বিষয়টিকে প্রতিভাত করছে। যদিও শেখ হাসিনার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দেশে উন্নয়ন যথেষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সত্যিকার অর্থেই মধ্য আয়ের দেশ হিসেবেও স্বীকৃতি লাভ করেছি। কিন্তু বেকারত্বের এই ভয়াবহ অবস্থায় দেশ প্রকৃতপ্রস্তাবে উপনীত হয়নি, দেশকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উপনীত করা হয়েছে। আজ এ কথা কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয় না যে, স্বাধীনোত্তর কালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শাসনভার করায়ত্ব করে দেশকে এই বিপর্যস্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এই দেশকে উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে, বিশেষ করে আর্থনীতিকভাবে পিছিয়ে রাখার কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রেখেছিল দীর্ঘ দুই দশকেরও অধিক কালব্যাপী এবং এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, দেশে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যানুসারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার প্রয়াসে দেশ পিছিয়ে আছে। বিশ্বের অন্য দেশগুলো যেমন শিক্ষার সঙ্গে সমানতালে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সে-রকম কোনও ব্যবস্থা আমাদের দেশে গড়ে তোলতে প্রচেষ্টা চালানো হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের সদিচ্ছাটিকে তাঁর মরদেহের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধীরা মাটি চাপা দিতে চেয়েছিল চিরতরে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শটিকে, সাধারণ মানুষের আর্থিক মুক্তির নীতিকে, তারা কবর দিতে পারেনি। এবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সূর্যসৈনিকের দলকে (বর্তমান সরকারকে) শিক্ষার উন্নতি ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান করার চ্যালেঞ্জটিকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। ভুলে গেলে চলবে না, শিক্ষার উন্নতি ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা ব্যতীত উন্নয়ন কখনই অর্থবহ হতে পারে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com