একটি গ্রামুরে কথা আছে, ‘পাটা পুথাইলে যুদ্ধ মরিছের কাম শেষ’। প্রাচীন পদ্ধতিতে পাথরের পাটাতে মরিচ রেখে শিলনোড়া দিয়ে ঘষে সে-মরিচকে গুঁড়ো করা হতো। এখন মসলা পেষার আধুনিক পদ্ধতির প্রচলনের ফলে পাটা-পুথাইলের ব্যবহার আর নেই। বাস্তবে কোথাও মসলা পেষার এমন ব্যবস্থা এখন না থাকারই কথা। দশক দুয়েক আগেই মসলা পেষার প্রাচীন পদ্ধতির অবলীলায় অবলুপ্তি ঘটেছে। এই মসলা পেষার পদ্ধতির মসলার অবস্থা হয়েছে ধর্মপাশা উপজেলার দেওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ক্ষতিবৃদ্ধি যে পক্ষেরই হোক, সে-বিবেচনা পরে, কিন্তু আপাতত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার উতুঙ্গাবস্থায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির এটি একটি আলামত তাতে কোনও সন্দেহ নেই এবং নির্বাচনের ফলোদয়ের আগেই আক্ষরিক অর্থেই ক্ষতি হলো, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। অর্থাৎ আগুনে পুড়ে গেলো একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পরোক্ষে ক্ষতি হলো শিক্ষার ও শিক্ষার্থী শিশুদের।
রাতের আঁধারে কে বা কারা বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে সেটা নিশ্চিত নয়। পত্রিকার সংবাদপ্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেরাই বিদ্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’ যে বা যাঁরাই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুন তাঁরা কাজটি যে ভালো করেননি, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। যদি ঘটনাটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষের যে-কোনও একপক্ষ বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগের কাজটি করে থাকেন তবে বলতেই হয় তাঁরা বিদ্যালয় কিংবা শিক্ষাকে হত্যা করে করে নির্বাচনী স্বার্থোদ্ধারের পথ সুগম করতে বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছেন, যে-টা রাজনীতিক নৈতিকতার দিক থেকে বিবেচনায় মোটেও সমীচীন বলে বিবেচিত হতে পারে না। এমন ধরণের নির্বাচনী কর্মকা- জনসাধারণের কাম্য নয়। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ যা-ই করা হোক না কেন জনগণ সত্যি সত্যি অন্ধ ও নির্বোধ নয়। এই কথাটা রাজনীতিক দলের নেতাকর্মীদের ভুলে গেলে চলবে না এবং মনে রাখতে হবে জনতা আছে বলেই নেতারা আছেন এবং রাজনীতি আছে।