1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ইতিহাসের তথ্যবিকৃতি কাম্য নয়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

‘… পাক হানাদারদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালেব ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কৃপেন্দ্র দাসের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।’ পত্রিকায় এই রকম একটি বাক্য পাঠ করার পরে কোনও পাঠকের মনে কোনও প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে কি না জানি না। সচেতন কারও মনে যদি হয়েও থাকে, যতোটুকু প্রবলাকারে হয়েছে, হয় তো তার চেয়ে শতগুণ প্রবলাকারে প্রশ্ন-উদ্রেকের আবেগটিকে অবদমনের স্পৃহারও উদ্রেক হয়েছে তৎক্ষণাৎ। পাঠ করার পরপরই সেটা মনের অতলে তলিয়ে গেছে। সংবাদপ্রতিবেদনে এই রকম ইতিহাসের তথ্যবিকৃতি অর্থাৎ কি না একটা মিথ্যা তথ্য ইতিহাসের সত্য তথ্যের মর্যাদা পেয়ে যাচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের অঙ্গ হয়ে যাচ্ছে, উত্তর প্রজন্মের কাছে। এমন ইতিহাসবিকৃতি হওয়া উচিৎ নয়, অন্তত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ক্ষেত্রে।
তালেব ‘সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ’ হননি। প্রকৃত ঘটনা হলো, তিনি সম্মুখ যুদ্ধে বেকায়দায় পড়ে ধৃত হয়েছেন। কথিত আছে, তাঁকে ধরে নিয়ে আসার সময়, লঞ্চঘাট থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত প্রসারিত সড়কের মাঝখানে এক ফার্মেসি দোকানদার (প্রখ্যাত রাজাকার বলে বিখ্যাত) দোকান থেকে বেরিয়ে তাঁকে জুতা পেটা করে। যেদিন পাকসেনারা সুনামগঞ্জ ছেড়ে যায়, সেদিন তাঁকে সঙ্গে নিয়ে সিলেটের দিকে রওয়ানা হয় এবং আহসানমারা পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে গুলি করে মেরে রাস্তার পাশের জলকাদায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। এই সময় তালেবের সঙ্গে আরও দুই বন্দি মুক্তিযোদ্ধারও একই পরিণতি ঘটে। ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনায় এই প্রসঙ্গটির সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। অন্তত দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর ও আবু সুফিয়ানের ভাষ্যা অনুসারে এই বর্ণনাটুকু কোনও কল্পকথা নয়, তা প্রমাণিত সত্য।
তালেবকে ‘সম্মুখ যুদ্ধে নিহত’ বললে, প্রকারান্তরে শুধু ইতিহাসকে বিকৃতই করা হয় না, পাকসেনাদের হাতে তালেবের বন্দিত্ব এবং বন্দি অবস্থায় অমানবিক অত্যাচারের শিকার হওয়ার প্রসঙ্গটিকে অস্বীকার করা হয়। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে নিহত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে এমন তথ্যবিকৃতি প্রকৃতপ্রস্তাবে শহীদদের মহান স্মৃতির অবমানার নামান্তর কেবল নয়, বরং সেটা ইতিহাস বিকৃতির কলঙ্কতিলক জাতির ললাটে লেপন করার সামিল।
উদ্ধৃত বাক্যটির ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালেব ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কৃপেন্দ্র দাসের সমাধিতে’ বাক্যাংশতে তালেব ও কৃপেন্দ্র দাসের উল্লেখ আছে, কিন্তু অন্য একজন চা-বাগানের শ্রমিক মুক্তিযোদ্ধার কোনও উল্লেখ নেই। ইতিহাসের এমন তথ্যবিকৃতি কীছুতেই কাম্য নয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com