1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মানবাধিকার দিবস পালন বিশ্বমানবিকতার একটি স্বাভাবিক কর্তব্য

  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮

একটি সংবাদশিরোনাম, ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন’। বলতে দ্বিধা নেই, বিশ্ববিখ্যাত একটি প্রপঞ্চ নিয়ে শিরোনামটি করা হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত এ জন্য যে, মানবাধিকারের প্রপঞ্চটি বিশ্ব ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোত ও বিতর্কিত একটি বিষয়। বিতর্কিত এ জন্য যে, ইতিহাস পাঠে কারও কারও মনে হয়েছে মানবসভ্যতায় মানবাধিকার বলে কোনও কীছু কখনওই ছিল না এবং বর্তমানেও নেই। মানবাধিকার একটি ফালতু, একেবারেই বায়বীয় ধারণা। মানবাধিকার নিয়ে এমন নেতিবাচক ভাবভাবনার যে একেবারেই কোনও কারণ নেই তা অবশ্য হলফ করে কেউ বলতে পারবেন বলে মনে হয় না। কিন্তু আবার বিপরীতে মানবাধিকার বলে একটা সামাজিক প্রপঞ্চ যে বিদ্যমান আছে সেটাও প্রমাণ করা একেবারে দুরূহ কোনও বিষয় নয়, যখন পত্রিকায় পাঠ করি কোনও একটি কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে, তখন মানবাধিকরের প্রপঞ্চটি নাকের ডগায় মূর্ত হয়ে উঠে বাঁশপাতার মতো কাঁপতে থকে। গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের সংবাদশিরোনাম ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন’-এর লাগোয়া ডানের কলামের সংবাদশিরোনামটি ছিল, ‘জগন্নাথপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা’। সত্যিকার অর্থে পৃথিবীর অনাচে কানাচে এইভাবে মানবাধিকার কতো প্রকারপ্রকৃতিতে কিংবা উপায়ভঙ্গিতে লঙ্ঘিত হচ্ছে তার কোনও লেখাজুখা নেই। একজন নারীর উপর পাশবিকতা চরিতার্থ করা যেমন মানবধিকার লঙ্ঘন, তেমনি পৃথিবীতে যুদ্ধগুলোর সময় কোটি কেটি মানুষ মেরে ফেলাও মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইজরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে, এক বিবেচনায় সেটি চার হাজার বছর আগের যুদ্ধের ধারাবাহিকতা অর্থাৎ কি না চার হাজার বছর যাবৎ চলমান একটি যুদ্ধ। পৃথিবীর ইতিহাস আসলে যুদ্ধের ইতিহাস অর্থাৎ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ে এটমবোমা ফাটিয়ে জাপানের হিরোসিমা-নাগাসাকি নামের দুটি শহর সম্পর্ণূ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল কিংবা তখন বিটিশশাসিত বাংলায়, যেখানে কার্যত যুদ্ধ হয়নি সেখানে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ লাগানো হয়েছিল, যা যুদ্ধাবস্থার চেয়েও ছিল বেশি মর্মান্তিক ও ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক। এই সব মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের কারণ একটাই, অর্থাৎ যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ লাগানো হয়েছিল মুনাফা অর্জনের বা সম্পদসঞ্চয়ের লোভে।
এদিক থেকে বিবেচনায় এখনও দেশে দশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ পুঁজিবাদ এবং বলা যায় একমাত্র কারণ। বিশ্বকে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে হলে পুঁজিবাদকে অবশ্যই বদলে দিতে হবে, করে তুলতে হবে মানবিক। কিন্তু পুঁজিবাদ সম্পর্কে তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পুঁজিবাদের চরিত্রই অমানবিক, মানুষের শ্রমশক্তি শোষণ করে পুঁজিবাদ নিজের শরীরে রক্তসঞ্চালন বজায় রাখে। তাঁরা মনে করেন, পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা যখন ক্রমবিকশমান সমাজকে চালাতে পারবে না তখন সমাজে অন্য একটি অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ পুঁজিবাদের মৃত্যুঘন্টা শুরু না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন’ করে যাওয়াই হবে বিশ্বমানবিকতার একমাত্র কর্তব্য।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com