প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চলছে। গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনানুসারে প্রথম দিনে পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতির সংখ্যা মোট ৪৯৮৩ জন। পত্রিকায় ফলাও করে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে পরীক্ষা।’ প্রতিবেদনে পরীক্ষা নির্বিঘেœ অনুষ্ঠিত হওয়ার খবরসহ বিভিন্ন কেন্দ্রসংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সংক্রান্ত বেশ কীছু পরিসংখ্যানের বয়ান ছাপা হয়েছ। কিন্তু ৪৯৮৩ জন পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতির কারণ কিংবা সে-সম্পর্কে জ্ঞাতব্য কীছু জানা যায় না এবং স্বাভাবিকভাবেই বুঝা যায় যে, প্রতিবেদনটি দেশের সার্বিক পরীক্ষা পরিস্থিতির মধ্যে বর্তমান কোনও না কোনও অসঙ্গতি কিংবা দুর্বলতাকে প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
একটি সমাপনী পরীক্ষার প্রথম দিনে ৪৯৮৩ জন পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতি ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হারটাকে এমন পর্যায়ে উন্নীত করেছে যে, বিষয়টি সচেতন যে-কোনও মানুষের মনে একটা আশঙ্কার উদ্রেক করে। এই আশঙ্কাটি প্রকৃতপ্রস্তাবে আশঙ্কা বলে বিবেচিত হতো না, যদি না ইতোমধ্যে শিক্ষাব্যবস্থার স্থবিরতা কাটানোর লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা না হতো। বিপুল সংখ্যক শিক্ষক বাড়ানো হয়েছে, অসংখ্য বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করা হয়েছে, শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষা-উপকরণের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে, শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এতো কীছুর পরও যদি একটি এলাকায় শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার বিষয়টিকে প্রতিরোধ করা না যায় এবং ঝরে পড়ার সংখ্যাটা ৫ হাজারকে ছুঁই ছূঁই করে, তবে বলতেই হয়, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। এমতাবস্থায় সচেতন মহলের ধারণা এই যে, একদিকে শিক্ষকরা নিজেদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং অন্যদিকে শিক্ষকদের কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষা বিভাগের কর্তকর্তারা ঠিকঠাকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। এরকম একটি অভিমত যদিও একটু অস্বস্থিকর, তবু তার মধ্যে সত্যের অপলাপ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখা ও একটি বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের তৎপর হওয়া উচিৎ।