“কালিবাড়ি পুকুর পরিষ্কার অভিযানে জেলা প্রশাসক ও মেয়র” পত্রিকার পাতায় যখন এমন একটি শিরোনাম পাঠের সৌভাগ্য হয়, তখন সেটা পড়তে যতটা ভালো লাগে তার চেয়ে মনে স্বস্তি জাগে এই জন্য যে, পুকুরটিতে জন্মানো কচুরিপানার জঙ্গল থাকবে না আর শহরের নাভীমূলের একমাত্র পুকুরটি সত্যিকার অর্থে একটু পুকুরের মতো হয়ে ওঠবে, পরিত্যক্ত মজা জলাশয় হয়ে থাকবে না। কিন্তু কালে কালে সেগুলো কমেছে। পুকুরগুলো বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের স্বার্থে ভরাট করা হয়ে গেছে। বাণিজ্যিক দিক থেকে বিবেচিত এলাকার পুকুরগুলোকে আধুনিক সভ্যতার খেই মেটাতে মুক্তবাজার অর্থনীতির বলি হতে হয়েছে। বর্তমান পৌরবিপণি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পুকুর ভরাট করে, হাছননগরের মসজিদের উত্তরের অংশের পুকুরটি অধুনা ভরাট করা হয়েছে জলটেংকি তৈরির সুবাধে। তাছাড়া শহরের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু পুকুর ভরাট করা হয়েছে। যেমন দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরীর বাড়ির প্রবেশ রাস্তার দু’পাশে দু’টি পুকুরের মধ্যে পূর্ব পাশের পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে, বাড়ির ভেতরে একটি ও বাড়ির উত্তরে অন্য আর একটি পুকুর এখনও বিদ্যমান আছে। দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরীর মালিকানা মরাটিলার ইটখলার পুকুরটি ভরাট করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এখন শহরের ভেতরে মুসলিম হোস্টেল, মৎস্য অফিস, পাউবো, বড়পাড়া, সরকারি হাসপাতালের ভেতরের পুকুর ক’টি এখনও ভরাট করা হয়ে যায়নি। কালিবাড়ি পুকুরটি বিভিন্ন স্থাপনার দ্বারা দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এ পুকুরটিকে রক্ষার ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এটি সম্পূর্ণ দখল হয়ে যাবে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।
সুনামগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা এই যে, এখনও বিদ্যমান পুকুরগুলোকে রক্ষার ব্যবস্থা করা হোক। ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর থাকলে যদি সম্ভব হয় তবে সেগুলোকে সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এবং ইতোমধ্যে বেআইনিভাবে দখল হয়ে থাকলে সেটাকে দখলমুক্ত করে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হয়।