সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠা আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে এবং প্রতিষ্ঠার সতেরো বছর পর সরকারি তকমা জুটেছে কলেজটির গায়ে। গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারিকরণের পর থেকে কলেজটিতে ছাত্রী ভর্তির সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে ছাত্রী সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি।
আমাদের বর্তমান সরকারি জনবান্ধব কেবল নয়, শিক্ষাবান্ধবও। ইতোমধ্যে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। গত ক’দিন আগেও সুনামগঞ্জ জেলাতেই ১০টি কলেজকে সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। অথচ আজ থেকে সতেরো বছর আগে সরকারিকরণকৃত সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজটি উন্নয়নে কেন এতটা অবহেলার শিকার হচ্ছে, সুনামগঞ্জবাসীর তা বোধগম্য নয়। এই কলেজটি পর্যাপ্ত লোকবলসহ অন্যান্য অনেক সমস্যায় ভারাক্রান্ত। ১২ জন এমএলএসএসের স্থলে আছেন মাত্র ২ জন। শিক্ষকের অভাবে রসায়ন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান ইত্যাদি বিভাগের পাঠদান কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ আছে বেশ কয়েক বছর যাবৎ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন-নিবেদন ‘অরণ্যে রোদনে’ পর্যবশিত হয়ে আসছে বরাবরের মতো। এমতাবস্থায় কলেজটি জীবমৃত অবস্থায় কোনও রকমে টিকে আছে মাত্র। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, কলেজটি একটি সরকারি কলেজ। সরকারি কলেজের এমন পর্যুদস্তু অবস্থা হোক, সেটা কারও কাম্য নয়।
সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে শিক্ষকের অভাবে পাঠদান কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত ছাত্রীরা মেধা বিকাশের প্রতিবন্ধকতায় ভোগছেন। এই ভোগান্তির কারণ নিয়ে বাক্যব্যয় না করে, যেটা বলা সমীচীন মনে করি, সেটা হলো, বর্তমান সরকার যেখানে শিক্ষাকে সুযোগ থেকে অধিকারে উন্নয়ন করেছেন, সেখানে সুনামগঞ্জের সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীদেরকে কেন সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হবে? প্রশ্নটি উঠতেই পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত হবে অচিরেই কলেজটির বিভিন্ন সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং বিশেষ করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পাঠদান কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে, সেসব বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা।