1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

কলেজ সরকারিকরণ শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নত করার বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৮

শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। একথা সর্বজনবিদিত। কিন্তু কথাটা এইভাবে বলা বোধ করি খুব একটা সঙ্গত নয়। বরং বলা উচিত, মুনাফামুখী পুঁজিবাদী অর্থনীতির অধীনে দেশ পরিচালিত করে ইচ্ছে করেই পিছিয়ে রাখা হয়েছে। পাকিস্তান আমলে কুদরতে খোদা শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ আমরা লাভ করেছিলাম। সেটা ছিল প্রগতিশীল একটি শিক্ষানীতি। যে-শিক্ষানীতি কার্যকর হলে লোকেরা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারতো এবং শিক্ষা সমাপনের সঙ্গে সঙ্গে কোনও না কোনও একটি কাজে নিজেকে ব্যাপৃত করে তার নিজের জীবন চালানোর সামর্থ্য অর্জন করতো, বেকারত্বের অভিশাপে জীবন তাদের অতিষ্ঠ হতো না। কিন্তু পাকিস্তানিরা চায়নি পূর্ববঙ্গের মানুষের আর্থনীতিকভাবে সাবলম্বী হোক। তারা দীর্ঘ দুই যুগ নির্মমভাবে পূর্ববঙ্গকে শোষণ করেছে। বঙ্গবন্ধু এই দেশকে পাকিস্তানি সা¤্রাজ্যবাদের কবল থেকে মুক্ত করে দেশে সর্বক্ষেত্রে অন্তত সাংবিধানিকভাবে হলেও সমাজতন্ত্রীনীতি কায়েম করেন। আশা করা গিয়েছিল, অচিরেই শিক্ষা একটি সুযোগ হিসেবে উচ্চমূল্যের পণ্য হয়ে না থেকে একটি সকল মানুষের জন্য একটি অধিকার হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল স্বাধীনতাবিরোধীরা সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অপুঁজিবাদী বিকাশকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রস্থপতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পূর্বপাকিস্তান যেমন ছিল তেমন একটি অবস্থায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তীতে বাংলাদেশ আমলেও কুদরতে খোদা শিক্ষা কমিশনের বিভিন্ন মৌলিক সুপারিশ উপেক্ষিত হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে। ফলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রকৃতপ্রস্তাবে এখনও মান্ধাতার আমলেই রয়ে গেছে। এবং বর্তমানে যে-সব শিক্ষাসংস্কার করা হয়েছে সেগুলোর ফাঁক ফোঁকরে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ঢুকে পড়ে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটিকে বলতে গেলে অকার্যকর করে তোলেছে। এই শিক্ষাব্যবস্থা কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা নয়। গাইড বইয়ের ব্যবসা, প্রাইভেট কোচিং, প্রশ্নপত্র ফাঁস, ঘুষ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সময় মেধা যাচাইয়ে উপেক্ষা, ছাত্রের ঘাড়ে অপ্রয়োজনীয় পাঠ্যসূচি চাপিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রকৃতপ্রস্তাবে শিক্ষাকে একটি উত্তম পণ্যে পরিণত করে তোলা হয়েছে মাত্র। এর দ্বারা বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে মানসম্পন্ন জীবন নির্বাহের উপযুক্ত কোনও মানুষ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের তুলনায় জীবনযাত্রায় পিছিয়ে পড়ছি। পিছিয়ে যে পড়েছি তার একটা উদাহরণ হলো, সৌদিতে যে-সব নারীশ্রমিক পাঠানো হচ্ছে তারা নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসছে। আমরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এখনও জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসতে পারিনি। অথচ বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালেই শিক্ষাকে জাতীয়করণের নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর সমাজতান্ত্রিক নীতি সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
সারাদেশে ২৭১টি কলেজকে সরকারি করে ফেলা চাট্টখানি কথা নয়। শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নত করার পথে এটি একটি বৃহৎ ও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “সরকারি হল জেলার ৮ কলেজ”। আমরা আনন্দিত যে, আমাদের সুনামগঞ্জে ৮টি কলেজকে সরকারি করে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com