1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ০৮:০১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রসঙ্গ : হাওরাঞ্চলে পোনানিধন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

পত্রিকান্তরে প্রকাশ হাওরাঞ্চলে বরাবরের মতো খনা জাল বা মশারি জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। মশারি জালের একটি খারাপ দিক হলো এই জালে অতি ক্ষদ্রাকার মাছও ধরা পড়ে। ফলে খনা জালের দ্বারা মাছ ধরা আর পোনানিধনযজ্ঞ করার মধ্যে কোন তফাৎ থাকে না।
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বৎসরের পর বৎসর ধরে মাছ ধরার কাজে মশারি জালের ব্যবহার হাওরাঞ্চল মৎস্যশূন্য হওয়ার প্রবণতাকে তরাণি¦ত করে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য বিলুপ্তির আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং এই বিলুপ্তায়ন প্রক্রিয়া সম্প্রতি আরও বেড়েছে। রুই, কাতলা, কাইলা, বোয়াল, শোল, গজার, আইড়, বুত্যা ইত্যাদি বৃহদাকারের মাছের প্রজাতির উৎপাদন দিন দিন কমে আসছে। এসব মাছ হাওরাঞ্চলে আগের মতো আর প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না। বৃহদাকারের মাছসহ কই, শিং, মাগুর, টাকি, পুঁটি, পাবদা, চিংড়ি ইত্যাদি মাছ এমনকি ক্ষুদ্রাকার চান্দা পর্যন্ত সকল প্রকার মাছের কোনটাই এই মশারি জালের গ্রাস থেকে রক্ষা পায় না। বলা হচ্ছে ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার হাওরে কম পানি হওয়ায় জালে পোনা ধরা পড়ছে বেশি’। অথচ জানা কথা, মশারি জাল দিয়ে পোনা মাছ শিকার করা সর্ম্পণূভাবে বেআইনি এবং এই বেআইনি কাজ বন্ধ করা প্রশাসনিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হাওরে পোনা মাছ নিধন বন্ধে শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম মশারি জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের যথাযথ ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
প্রশাসনিক এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই হাওরাঞ্চলে অন্তত পোনানিধন পরিপূর্ণভাবে বন্ধ হোক। তা সম্ভব হলে দেশে মৎস্য উৎপাদন বাড়বে এবং মানুষ পাবে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তাপশক্তি ও পুষ্টি। মনে রাখতে হবে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই আপ্তবাক্যের বাস্তবতা থেকে দেশ ও জাতিকে বিচ্যূত করে প্রকৃতার্থে দেশোন্নয়ন অর্থবহ হয়ে উঠবে না। হাওরাঞ্চলের মানুষ বর্ষায় ছয় মাস বলতে গেলে প্রায় বেকার থাকে। তারা তখন হাওরের পানিতে মাছ শিকার করে জীবননির্বাহের সহজ পাথটি বেছে নেয়। হাওরের নিবন্ধিত জেলে যত আছে প্রায় ততো সংখ্যক মৌসুমি জেলে আছে। বছরের পর বছর ধরে বর্ষায় সকলে মিলে হাওরে নেমে মাছ শিকারে নেমে পড়ে প্রকারান্তরে হাওরকে মৎস্যশূন্য জলাশয়ে পরিণত করে তোলছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে মাছের দেশে আর মাছ থাকবে বলে মনে হয় না। তাই হাওরাঞ্চলে হাওরের উপর নির্ভর জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মস্থান সৃষ্টির ব্যাপারেও প্রশাসনকে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে পোনানিধন বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা কার্যত ব্যর্থতায় পর্যবশিত হবে, হাওরে মৎস্যপ্রজাতি বিলুপ্তির প্রবণতাকে প্রতিরোধ করা যাবে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com