গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষ্য উদ্ধৃত করে সংবাদশিরোনাম করা হয়েছে, ‘শিক্ষার ব্যয় খরচ নয়, বিনিয়োগ’। যথার্থ নির্দেশনা। বর্তমান বাংলাদেশের জটিল আর্থসামাজিক বিন্যাসের পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নের পথে যাত্রাপর দেশের জন্য এমন তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ ভাষ্য আর একটিও হতে পারে না। এই একটি মাত্র নির্দেশনার সার্বিক বাস্তবায়ন ঘটাতে পারলেই দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হয়ে পড়বে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দেশ উন্নতির শিখরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সকল শর্ত পূর্ণ হয়ে যাবে। শিক্ষা ভিন্ন সম্পদ প্রকৃতপ্রস্তাবে বানরের গলায় মুক্তোর মালার অধিক কীছু নয়, কারণ তা কোনও সুসংস্কৃত সংস্কৃতি তৈরি করবে না বরং সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও নিগ্রহের উৎস হয়ে আবির্ভূত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতিম-িত এক কলামে বিস্তৃত সংবাদের পাশেই ছাপা হয়েছে, তিন কলামে বিস্তৃত আরেকটি সংবাদ। সংবাদটির শিরোনাম “বড়দল নতুন হাটি প্রাথমিক বিদ্যালয় : ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান”। পাশাপাশি এই সংবাদ দুইটি পাঠ করার পর পাঠকের মনে কী ধরনের অর্থদ্যোতনা কিংবা মিথষ্ক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে? প্রথমেই মনে হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাচিন্তার সঙ্গে দেশের শিক্ষায়তনের স্থাবর অবস্থা বিনিয়োগ বলে বিবেচিত হওয়ার মতো অবস্থায় নেই বরং ব্যয়ের খাতা খোলার জন্যে তাগাদা দিচ্ছে। যেখানে শিক্ষায়তনের স্থাপনাটি ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ যে-কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ে ছাত্রছাত্রীর প্রাণহানির আশঙ্কার দন্তব্যাদন ভয়ঙ্করভাবে প্রতিভাত হচ্ছে, সেখানে শিক্ষাব্যয়ের খরচ না হয়ে বিনিয়োগ হওয়াটা সুদূরপরাহত একটি প্রপঞ্চ। যে-কেউ এমনটি ভেবে বসতেই পারেন, আর যদি ভেবে বসেনই, তবে তাঁকে খুব একটা দোষারোপ করা বোধ করি সমীচীন হবে না।
আমরা আশা করব, অচিরেই ‘বড়দল নতুন হাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়’টিকে মেরামত কিংবা অবস্থা বিবেচনায় নতুন করে নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিশুশিক্ষার্থীদেরকে জীবননাশের আশঙ্কা থেকে মুক্তি দেওয়া এবং সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের প্রাথমিক দায়িত্বটুকু অন্তত সম্পন্ন করা হবে।