বদলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁরা অতীতের মতো মুখবুজে সকল কর্মকা- মেনে নিচ্ছেন না। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে, নিয়ম না মেনে হচ্ছে অনেক কাজ। যাঁরা এইসব কাজ করেন তাঁরা প্রত্যেকেই জানেন যে, কাজটা অন্যায়। করা ঠিক নয়। তবু তাঁরা দু’পয়সা মুফতে কামিয়ে নেওয়ার লোভে এই সব দুর্নীতি করেন এবং তাঁদেরকে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে থাকা দু’একজন দুর্নীতিবাজ প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন।
ঠিকাদার নিয়ম না মেনে সেতুর কাজ করে। সে সেতু মাঝে মাঝে ভেঙেও পড়ে। পত্রিকায় খবর পাওয়া যায়। এমন ঘটনা অতীতে ঘটেছে সুনামগঞ্জ তাহিরপুর সড়কে। একটি সেতুতে চাকাস্পর্শের আগেই সেটি ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করবে কি টুশব্দটি পর্যন্ত করেনি। এবার সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি নিয়ে দুর্নীতি করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে তাহিরপুর থেকে জগন্নাথপুরে। জগন্নাথপুরবাসী ফুঁসে উঠে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কোনও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা চান না তাঁদের উপজেলায়। পত্রিকার ভাষ্যানুরে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তাকে উপজেলার সুধীজন ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও তাঁকে জগন্নাথপুরে অবাঞ্ছিত মনে করেন।
সত্যি পরিস্থিতি বদলে গেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেগে উঠছে। কিন্তু কথা হলো, একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই দুইটি উপজেলার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে কিন্তু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার উপরওয়ালা কর্মকর্তার নজরে তাঁর অধস্থন কর্মকর্তার কোনও দোষ চোখে পড়ে না। তাঁকে তিনি শাস্তির সম্মুখীন না করে বরং পুরস্কার স্বরূপ পূর্বেকার চাকরিস্থানের চেয়ে সুবিধাজনকস্থানে বদলি করেন। সত্যি চমৎকার।
বর্তমান জনবান্ধব সরকার সরকারি কর্মচারীদের বেতন আশাতীত পরিমাণে বাড়িয়ে দিয়েছেন, কেবল সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি বন্ধের জন্য। কিন্তু তারপরও যদি এইরূপ দুর্নীতি চলতে থাকে এবং উপরমহল থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনোরূপ প্রতিকার গ্রহণ না করে বরং তাঁকে আরও সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা হয় তবে একদিন এমন হবে যে ক্ষুব্ধ জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। সুতরাং সাধু সাবধান।