মানবাধিকারের নাম করে মানবাধিকার হননের অপকর্ম বাংলাদেশ ব্যতীত বিশ্বের আর কোনও দেশে বোধ করি সংঘটিত হয় না। অভিযোগ উঠেছে, এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ মানবাধিকার নিয়ে সারাদেশে কাজ করে এমন সংগঠনের ঢাকার দুর্নীতিবাজ নেতাদেরকে টাকার বিনিময়ে পটিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা খোলে বসে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করা অব্যাহত রেখেছে।
সংবাদ পাঠে জানা যায় যে, টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার সংগঠনের কার্ড প্রদান করা হয়। তারা সাধারণত গ্রামের সহজ-সরল মানুষজনের পারিবারিক বিরোধ, জমিসংক্রান্ত বিবাদ ইত্যাদি সমস্যার তথাকথিত তদন্তের কথা বলে, এমনকি বিশেষ নোটিস প্রদান করে, ক্ষেত্রবিশেষে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে থাকে। তাছাড়া তারা টাকার বিনিময়ে সম্মাননা সনদ বিক্রির ব্যবসাও করে। সুনামগঞ্জ জেলায় মানবসমাজের মানবাধিকার প্রতারণায় পিছিয়ে নেই। গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি শিরোনাম ছিল : ‘ভুইফোঁড়’ মানবাধিকার সংগঠনের তৎপরতা’। অবাক করার মতো একটি সংবাদ। জেলা সদরে বড় মাপের নামফলক টাঙিয়ে ভুইফোঁড় সংগঠনগুলো এসব অপকর্ম চালিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নজরদারি নেই!
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে সবচেয়ে খারাপ পুঁজিবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এখানে পুঁজিবাদ ‘কল্যাণরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা না করে সর্বোচ্চ মাত্রার শোষণ-নিপীড়নমূলক, দুর্নীতিগ্রস্ত ও আমানবিক অর্থব্যবস্থাকে অনুমোদন করেছে। তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো, বাংলাদেশ যখন পরিপূর্ণরূপে মাদকপ্রবণ একটি দেশে পর্যবশিত হওয়ার উপক্রম তখন বিপন্ন দেশকে রক্ষা করতে মাদকের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর অভিযানে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে। মাদক যুবশক্তিকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশের আর্থনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে এবং দুর্নীতি মানুষের নৈতিক শক্তিকে বিনাশ করে দিয়ে মানুষকে পশুতে পরিণত করছে। প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মানবিক সমাজের অভ্যন্তরে অমানবিকতার উত্থান ঘটছে। এমনটি চলতে দেওয়া যায় না। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে জেলা প্রশাসনের সক্রিয় হওয়া উচিত।