বিশেষ প্রতিনিধি::
বহুল আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে দীর্ঘ দেড়যুগ পর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন গত ২৫ ফেব্রয়ারি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শে সম্মেলনের দিন প্রধান অতিথি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। একমাসেরও অধিক সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন খবর পাওয়া যায়নি। নতুন কমিটির নেতাদের নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা দিবসও উদযাপিত হয়নি। দলীয়ভাবে পালিত হয়নি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনও।
জানা যায় নানা প্রতিবন্ধকতা ও রাজনৈতিক মেরুকরণের মাধ্যমে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় ১৮ বছর পর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবমুখর সম্মেলনে মানুষের ঢল নেমেছিল। রাজনৈতিক মহলের ধারণা সুনামগঞ্জে আ.লীগের ওই সম্মেলনে জমায়েত ছিল রাজনৈতিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ জমায়েত। আ.লীগের তৃণমূলের তিন প্রজন্মের নেতারা এসেছিলেন সম্মেলনে। তারা সবাই ছিলেন উজ্জীবিত।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে সভাপতি এবং তরুণ ও মেধাবী নেতা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। দুই প্রজন্মের দুই নেতাকে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হলে সাধারণ নেতাকর্মীরা খুুশিই হন। তারা আশা করেছিলেন শীগ্রই প্রতিহিংসার উর্ধে এসে দলের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠনে উদ্যোগী হবেন দুই প্রজন্মের দুই নেতা।
জানা গেছে প্রথমে ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিয়েই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে মতদ্বৈততা দেখা দেয়। এ কারণে যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নেতারা মনোনয়ন পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় দলীয় কার্যক্রমে গতি আসছেনা। তবে সভাপতির পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেননা বলে তৃণমূল আ.লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন। দলের বৃহত্তর স্বার্থে সভাপতিও দল গুছাতে উদাসীন বলে অনেক নেতারা মনে করেন।
নেতাকর্মীরা জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পরই কর্মীরা আশা করেছিলেন শীঘ্রই কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সভাই করতে পারেননি দায়িত্বশীলরা। এমনকি দায়িত্ব পাবার পর তারা মহান স্বাধীনতা দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনও পালন করতে পারেননি। তবে সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন অন্য ব্যানারে এই দুই দিবস নেতাকর্মীদের নিয়ে পালন করেছেন। সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে দায়িত্ব পাবার পর এই কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।
দায়িত্ব পাবার পর দলীয় কর্মসূচি পালন না করলেও তারা এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কোন বৈঠক করেননি বলে জানা গেছে। আদৌ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে কি না তাও জানেনা সাধারণ নেতাকর্মীরা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, নেতা পরিবর্তনে সাধারণ নেতাকর্মীরা খুশি হলেও সেই খুশির আমেজ বেশিদিন থাকেনি। কারণ নেতৃত্বের মেধার স্ফুরণ দেখাতে পারেননি দায়িত্বশীলরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হলেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে দলের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের সুযোগ দেওয়া হবে। জাতির জনক বঙ্গববন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে মেধা ও যোগ্যতার সমন্বয়ে একটি সেরা কমিটি উপহার দেওয়া হবে।