1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করতে হবে

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ জুন, ২০১৮

দেশে যখন ব্যাপক মাদকবিরোধী অভিযান চলছে, তখন গত মঙ্গলবার (২৬ জুন ২০১৮) দেশে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উদযাপিত হয়ে গেলো। বক্তারা মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে বিষোদগার করেছেন। তাদের বক্তব্যগুলো কেবল বলতে হবে তাই বলার গোছের কোনও কথা নয়। দেশের মঙ্গল করতে চাইলে সত্যিকার অর্থেই তাঁদের কথাগুলো অনুসরণযোগ্য ও বিকল্পহীন। তাঁরা বলেছেন : মাদকের সমস্যা ক্যান্সারের চেয়েও খারাপ, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান আর একটি মুক্তিযুদ্ধ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকবল বাড়াতে হবে, সীমান্ত থেকে মাদক আসা বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া মাদকব্যবসায়ীদের ধরার পাশাপাশি মাদকের অর্থদাতা, অশ্রয়দাতা এবং যারা মাদক অপরাধীদের আদালত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এই কথাগুলো কেবল ভালো ভালো কথা নয়, একধরনের উদ্বিগ্নতার প্রকাশও বটে। কথাগুলো এই সত্য উন্মোচন করে যে, দেশ সংকটাপন্ন।
এই সংকটের একটি আলাদা স্বরূপ আছে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ তরুণ। তারা ৮০ শতাংশ কর্মক্ষম। এরকম একটি দেশ সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অবলম্বন করে উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারে অতি সহজে এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তাই ঘটছে। কিন্তু বাংলাদেশের দেশি ও বিদেশি শত্রুরা বাংলাদেশ উন্নত হয়ে যাক, এটা চায় না। তাই তারা রোহিঙ্গা সংকটকে বাংলাদেশের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে এবং দেশের যুবশক্তিকে নেশাগ্রস্ত করে অনিবার্য মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই : বাংলাদেশকে মাদক বিক্রির বাজার করে তোলা এবং অক্ষম, ব্যাধিগ্রস্ত ও মৃত্যুর জন্য অপেক্ষাপর যুবকদের দেশে পরিণত করতে চায়। যুবশক্তি দেশের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে উঠলে দেশের অগ্রগতির স্বপ্ন বাংলাদেশ কখনও বাস্তবায়িত করতে পারবে না। এই ষড়যন্ত্রের বিস্তৃতি আরও ব্যাপক, এমনকি এর সঙ্গে সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদও ওতপ্রোত। বাংলাদেশের সামনে এই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার কোনও বিকল্প নেই। এই কারণে আমাদের সজ্জন জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেছেন : নিজের ও দেশের ভালো চাইলে মাদক থেকে দূরে থাকা চাই। মাদক প্রতিরোধে সাফল্য দেশের আর্থনীতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করবে। দেশকে মাদক থেকে রক্ষা করতে তরুণদেরকেই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র বিনির্মাণে দায়িত্ব নিতে হবে।
একটি কষ্টকর বিষয় বক্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। সেটি হলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল স্বল্পতার প্রসঙ্গ। সারাদেশে এই অধিদপ্তরের লোকবল মাত্র ৪৫০ জন। এটা কী করে হয়। এটা তো একটা দারুণ হাস্যকর ব্যাপার। অজপাড়া গাঁয়ের তরুণ এখন মাদকের টাকা না পেলে মাকে কোপিয়ে হাসপাতালে পাঠায়। অর্থাৎ দেশের আনাচে-কানাচে মাদকের ব্যবসা বিস্তৃত। বিস্তৃতির বহরটা এমন যে হাজার হাজার মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায় অর্থদাতা, আশ্রয়দাতা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে প্রশাসনেও তাদের লোক নিয়োজিত আছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিশাল সংখ্যক লোকবলের মোকাবেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবলের ৪৫০জন তো সাড়ে চারজনের সঙ্গে তুলনীয়, এর বেশি কীছু নয়। এমতাবস্থায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী না করার পক্ষে কোনও যুক্তি নেই, বরং এতোদিন এই অধিদপ্তরটিকে পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ না দিয়ে দেশের ক্ষতি করা হয়েছে বলেই প্রতিভাত হয়। এই প্রশাসনিক ত্রুটি এখনই সংশোধন করা চাই। অন্যথায় বাংলাদেশকে ভয়াবহ পরিণতির অপেক্ষায় থাকতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com