মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর ::
জগন্নাথপুরে একই স্থানে দুই পক্ষের রথযাত্রা উৎসব পালনকে কেন্দ্র করে বুধবার (৬ জুন) বিকেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আয়োজনকারী দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও কাউন্সিলরসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হচ্ছেন জগন্নাথপুর থানার ওসি মুরসালিন, এএসআই শাহ জামাল, কনস্টেবল লায়েব আলী, সাংবাদিক মো. শাহজাহান মিয়া, সংবাদকর্মী বিপ্লব দেবনাথ, পৌর কাউন্সিলর সুহেল আহমদ, ব্যবসায়ী দিবাকর পাল, ধীরেন দেব, সন্তোষ দেব, মিন্টু দেব, দিবারাজ আচার্য্য। অন্যান্য আহতদের নাম জানা যায়নি।
এর মধ্যে গুরুতর আহত দিবাকর পালকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
জানাগেছে, বিগত প্রায় দুইশত বছর ধরে জগন্নাথপুর পৌর শহরের স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে (রথবাড়ি) স্থানীয় জগন্নাথ জিউর মন্দির ও বাসুদেব জিউর মন্দির কমিটির উদ্যোগে সার্বজনীনভাবে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের মতো এবারো এ দুই মন্দির কমিটির উদ্যোগে রথযাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এবারই প্রথম বাসুদেব নাম হট্ট সংঘ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে ইসকনদের নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে হঠাৎ নতুন করে একই স্থানে আলাদাভাবে রথযাত্রা উৎসব পালনের ঘোষণা দেয়ায় সর্বস্তরের সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় অবশেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের হস্তক্ষেপে শর্ত সাপেক্ষে নিষ্পত্তি হয়। দু’পক্ষকে বলা হয়- পুরনো মন্দির কমিটিগুলো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ও নতুন সংগঠন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রা উৎসব পালন করবে। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পুরনো মন্দির কমিটির লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে রথযাত্রা উৎসব পালন করেন। তবে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় বাসুদেব বাড়ি থেকে নতুন সংগঠনের পৃথক রথযাত্রাটি অতিরিক্ত পুলিশি প্রহরায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বের হয়। এ সময় রথযাত্রাটি স্থানীয় বড় দিঘির দক্ষিণ পাড় পয়েন্টে আসা মাত্র উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, কাউন্সিলরসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হন। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রথযাত্রাটি জগন্নাথপুর বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে-সংঘর্ষের খবর পেয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আহতদের খোঁজ-খবর নেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত হলেও উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারো সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ওসি মো. মুরসালিন জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।