মো.শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুর-গোয়ালাবাজার সড়কের বেহাল দশার কারণে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের এপ্রোচ উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে, এছাড়া গত ৭ মাস আগে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হলেও গত প্রায় ২ মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিগত প্রায় ৭ মাস আগে সড়কটির কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে এখনো ২০ ভাগ কাজও শেষ হয়নি। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দাবি করছে ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে তাদের এ দাবি মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী জনতা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিগত প্রায় ২ বছর আগে জগন্নাথপুর-গোয়ালাবাজার সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। গত বছর সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ সময় সড়কটির সংস্কার কাজের দাবিতে স্থানীয় জনতা প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন করেন। ভুক্তভোগী জনসাধারণের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের উদ্যোগে গত বছর সড়কের সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়। জগন্নাথপুর পৌর শহরের ভবেরবাজার থেকে সৈয়দপুর বাজার হয়ে কাঠালখাইড় পর্যন্ত মাত্র ১৩ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজের জন্য ৩ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সজীব রঞ্জন দাশ। পরে কার্যাদেশ নিয়ে গত প্রায় ৭ মাস আগে সড়কে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ৭ মাসে সৈয়দপুর বাজার ও গ্রাম এলাকায় মাত্র ২০ ভাগ কাজ হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সড়কের ৮০ ভাগ কাজ এখনো বাকি রয়েছে। এর মধ্যে গত প্রায় ২ মাস আগে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে স্থানীয় ভুক্তভোগী লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান। এছাড়া পুরো সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাজ করার জন্য পুরনো এপ্রোচ উঠনো হলেও কাজ না করায় বৃষ্টি হলে সড়কটি কাঁদামাটিতে পরিণত হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় গত প্রায় ২ মাস ধরে সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় দিনদিন জনগণের ভোগান্তি আরো বেড়েই চলেছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তৈয়ব মিয়া কামালী বলেন, জনগণের ভোগান্তি আর সহ্য করা যাচ্ছে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সড়কটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সজিব রঞ্জন দাশ-এর সহযোগী সৈয়দ মাসুম আহমদ জানান, এ পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আরো কয়েক মাসের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। সড়কে কাজ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কে পুরোপুরি কাজ বন্ধ হয়নি। টুকটাক কাজ চলছে। এখন বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণে সড়কে বিটুমিনের কাজ করা যাচ্ছে না। তবে আরসিসি কাজ হচ্ছে। এছাড়া ঈদের ছুটিতে শ্রমিকরা বাড়িতে চলে যাওয়ায় কাজের গতি কমেছে। তবে ঈদের পর থেকে আবার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) রফিকুল ইসলাম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর থেকে অবহেলা করছে। তারা কাজ করার মৌসুমে কাজ করেনি। এখন বৃষ্টি মৌসুমে এসে বৃষ্টির অজুহাতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আবার কাজ শুরু না করলে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাতিলের জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবো।