1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম : এখনও জমা হয়নি তদন্ত রিপোর্ট

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৭ জুন, ২০১৬

বিশেষ প্রতিনিধি ::
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বিভিন্ন অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত কমিটিসহ পৃথক দু’টি কমিটি গঠিত হলেও কোন কমিটিই এখনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তাই ফসলহানির ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি তদন্ত কমিটিগুলো ফসলরক্ষার বিষয়ে যে মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ার কথা ছিল তা থেকেও বঞ্চিত হবেন হাওরবাসী। হাওরবাসীর মতে বাঁধ নির্মাণে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো খুঁজে বের করে বাঁধ নির্মাণে পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ ছিল তদন্ত কমিটিগুলোর।
জানা যায়, ফসলহানির পর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জোরালো আহ্বানের কারণে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মন্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে দ্রুত ফসলহানির কারণ এবং আগামীতে ফসলরক্ষায় কি কি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা তদন্ত প্রতিবেদনে তোলে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়। জানা গেছে, এই কমিটিও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। কবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে তাও স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভাসহ সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, পিআইসি’র লোকজন এবং ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের বিচার দাবি করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এবার প্রায় ১৫শ কোটি টাকার ফসলহানির ঘটনা ঘটেছে বলে কৃষক ও জনপ্রতিনিধিরা জানান।
এদিকে পত্র-পত্রিকায় বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ এবং সরকারের বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া অনিয়মের খবরের প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। রহস্যঘেরা ওই কমিটিতে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্টরা তার নামও বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। জানা গেছে এই কমিটিও এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়নি। জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এক সদস্যের ওই কমিটি প্রতিবেদন দিলেও পাউবো সংশ্লিষ্টদের রক্ষা করে প্রতিবেদন দেবে। ফলে ফসলহানির ঘটনায় জড়িতরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে।
কৃষক ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, জেলার একমাত্র বোরো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রতি বছরই দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিদায় হতে হয়েছে পাউবো’র কর্মকর্তাদের। ২০০৪ সালের ২২ এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বাঁধ নির্মাণে অবহেলার অভিযোগে তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ মিয়াকে এবং ২০১০ সালে মার্চের শেষ সপ্তাহে হাওরের ফসল ডুবে যাওয়ার ঘটনায় পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিমকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ২০১৫ সালেও একই অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমদকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছিল।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ বলেন, বাঁধ নির্মাণে অবহেলা, অনিয়ম এবং যথাসময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখের শুরুতেই অর্ধেক ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের দাবি ছিল যাদের অবহেলা-অনিয়মে ফসলহানি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আগামীতে যাতে ফসলহানির ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এই প্রতিবেদককে ফোনে গত মে মাসে বলেছিলেন, বাঁধ রক্ষা করতে হলে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নিজ নিজ এলাকার বাঁধ রক্ষায় জনগণকে সক্রিয় করা গেলে বাঁধের কাজ ভালো হবে। গতকাল তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মন্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, কমিটি গঠনের পর আমি উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে দেশের বাইরে চলে গিয়েছিলাম। যার ফলে কাজ করা সম্ভব হয়নি। আগামী বুধবার কমিটি এ নিয়ে বৈঠক করবে। বৈঠকে এ বিষয়ে কার্যকর আলোচনা করেই তদন্তকাজ শুরু করে দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছর উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল ধরেননি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com