হাওররক্ষা বাঁধে অনিয়ম এবং যথসময়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ না করায় পিআইসির লোকজন দায়ী বলে মনে করছে প্রশাসন। হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজে পিআইসির লোকজনের গাফিলতি ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে। জামালগঞ্জ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় হাওররক্ষা বাঁধের কাজে নিয়োজিত ১১ জন পিআইসি সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
পাউবো’র দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন দাসের থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, পিআইসিগণ ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে গাফিলতি করেছেন। যথাসময়ের মধ্যে গুণগত মানের কাজ বজায় না রেখে যথাযথ ডিজাইন পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ করছেন, তাদের এই নি¤œমানের কাজের ফলে হাওরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে পিআইসি লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
একই ধরনের অভিযোগে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ভাটিধল পিআইসি নং ১৫ (খ) এর সভাপতি চন্দন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। তাছাড়া কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল ধরেছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের ডেগার হাওরের ডাইক-৩ এর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩১নং প্রকল্পের কাজের শুরু থেকেই ওই প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত পিআইসিগণ কাবিটা নীতিমালা না মেনে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ করতে থাকেন। বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কাটা, বাঁধে কোনো কম্প্রেসিং, ড্রেসিং না করায় বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দেয়।
এভাবে জেলার অধিকাংশ হাওরের পিআইসির লোকজন বাঁধ তৈরি করছে। যা পানি আসার সাথে সাথেই বাঁধগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ পর্যন্ত ১২০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ পাওয়া জেলার হাওররক্ষা বাঁধের টাকায় ফসল রক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। হাওরপাড়ের কৃষকদের মন্তব্য বাঁধ নির্মাণে যে টাকা বরাদ্দ এসেছে তা হরিলুট হচ্ছে, ফসলরক্ষা হবে না। আমরা মনে করিÑ প্রশাসন যদি ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে তদারকি আরো জোরদার করে এবং নিয়ম অনুযায়ী বাঁধে কাজ সম্পন্ন করে তা হলে হয়তো কৃষক তার ফসল ঘরে তুলতে পারবে। এ ব্যাপারে হাওররক্ষা বাঁধের কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরো কঠোর দৃষ্টি দিবে Ñএটাই আমাদের প্রত্যাশা।