স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ শহরে যানজটের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে ইজিবাইককে দায়ী করেছেন শহরবাসী। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে বাইকগুলো। ট্রাফিক পুলিশও এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
শহরের ব্যস্ততম সড়ক স্টেশনরোড। ওয়েজখালি থেকে মল্লিকপুর হয়ে নতুনকোর্ট পয়েন্ট, পুরাতন বাসস্টেশন, কালীবাড়ি মোড় হয়ে এ সড়কটি আলফাত স্কয়ারে পৌঁছেছে। এক সময় এই সড়ক দিয়ে নাগরিকরা সাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারলেও, এখন যানজটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। এছাড়া শহরের ডিএস রোড, কালীবাড়ি, উকিলপাড়া, ষোলঘর, কাজীরপয়েন্টসহ অন্যান্য সড়কে যানজট লেগে থাকে। এই সব এলাকায় যানজটের প্রধান কারণও ইজিবাইক।
সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যানজট সমস্যা দূরীকরণে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করা হলেও সুনামগঞ্জে তার উল্টো। প্রায় প্রতিদিনই শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইজিবাইকের সংখ্যা।
শহরে চলাচলকারী ইজিবাইক চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শহরে এখন ইজিবাইক শ্রমিকদের দু’টি গ্রুপ রয়েছে। আর এজন্য নিজেদের গ্রুপে লোকবল বাড়াতে একে-অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে সড়কে নামাচ্ছেন নতুন নতুন ইজিবাইক। সূত্রমতে এ গ্রুপিংয়ের একটির নেতৃত্বে আছেন সোহেল আহমদ ও অন্যটির নেতৃত্বে রয়েছেন আমির হোসেন।
দুই গ্রুপের দায়িত্বশীলরা নিয়মতান্ত্রিকতার কথা বললেও তাদের সদস্যরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না। সড়কে তারা বেপরোয়া গতিতে যেমন ইজিবাইক চালান তেমনি যত্রতত্র পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করেন। কোনো সিগন্যাল ছাড়াই সড়কে ইজিবাইক থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করেন।
এদিকে, স্টেশন রোডের কালিবাড়ি মোড়ে সৃষ্ট যানজটে নাগরিকরা একরকম অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও ট্রাফিক সিগন্যালের প্রতি কোনরূপ গুরুত্ব দিচ্ছেন না ইজিবাইক চালকরা। সড়ক দখল করে ইজিবাইক পার্কিং করা হচ্ছে। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। কেবল ইজিবাইকের বেপরোয়া অনিয়মের লাগাম টেনে ধরতে সদর ট্রাফিকের একটি টিম প্রতিদিন সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করে থাকে। তবুও এসব ইজিবাইককে নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্টদের।
এ ব্যাপারে শহরের জামতলা এলাকার উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘বাজারে আসার পথে এখন প্রায়ই যানজটে পড়তে হয়। আগে এরকম ছিল না। এখন দিন যতো যাচ্ছে ইজিবাইকের সংখ্যা ততো বাড়ছে। ইজিবাইকগুলো সড়ক দখল করে পার্কিং করে রাখা হয়। এতে হেঁটে চলাচল করাও মুশকিল হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দেয়া দরকার।’
ষোলঘর এলাকার নাহিদ হাসান বলেন, ‘শহরে অখন জ্যাম লাগে একটু পরে পরেই। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দেখছি থানা পয়েন্ট আর দ্দোজা মার্কেটের সামনে বেশ কয়েকজন দাঁড়াইয়া থাকোইন। তারার দেওয়া সিগন্যালও পাত্তা দেয়না ইজিবাইকের ড্রাইভাররা। আমরা ভোগান্তির শিকারহ হইলেও দেখার যেন কেউ নাই। ইজিবাইকগুলা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।’
এ ব্যাপারে সদর ট্রাফিক সার্জেন্ট সালাউদ্দিন কাজল বলেন, ‘শহরে চলাচলকারী যানবাহনের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে যে, কোনভাবেই রাস্তার পাশে পার্কিং করা যাবে না। যানজট নিরসনে আমাদের বিশেষ টিম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহে দায়িত্ব পালন করে থাকে। ইজিবাইকগুলোর চালকেদের কোন দক্ষতা নেই বললেই চলে। একটা গাড়ি চালাতে যে জ্ঞান থাকা দরকার তার বিন্দুমাত্রও তাদের মধ্যে নেই। তারা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা নামা করে। আর এ থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব অদক্ষ চালকদের কারণে নাগরিকরা ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা নিয়মিত আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’