ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সলপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন সংস্কার ও মেরামত কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদেরকে ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নবনির্বাচিত সদস্য ইকবাল হোসেন বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কাজের জন্য প্রাপ্ত সরকারি অর্থ বরাদ্দ থেকে চাঁদা না পেয়ে তিনি এ কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যৌথভাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গতকাল শুক্রবার দুপুরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সলপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ভবন সংস্কার ও মেরামত কাজের জন্য চলতি অর্থবছরে প্রাথমিক পিডিবি ৩ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য রড, সিমেন্ট, কাঠসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় করে তা গত ২০জুন সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এনে রাখা হয়। ওই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই কাজের জন্য চারজন শ্রমিক নিয়োজিত করে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় সেখানে ভবন সংস্কার ও মেরামত কাজ শুরু করান। খবর পেয়ে সেলবরষ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সকাল ১০টায় সেখানে গিয়ে এ শ্রমিকদেরকে কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। এবং এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে তার সঙ্গে আলোচনা শেষ করে পরে কাজ শুরু করতে বলেন। এ অবস্থায় শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান।
সলপ সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শামছুদ্দোহা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন খুবই উগ্র প্রকৃতির লোক। তিনি আমার কাছে এ কাজ বাবদ গত বৃহস্পতিবার সকালে ১০হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি তা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করায় তিনি আমাদের নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস সালাম জানান, সেলবরষ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেনের অনৈতিক দাবি না মানায় বিদ্যালয় উন্নয়ন কাজ বন্ধ রেখেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সেলবরষ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য পদে আছি। এ কাজে কতো টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা আমাকে জানানো হয়নি। আমি বরাদ্দ জানতে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম, কাজ বন্ধ করতে নয়। তিনি দাবি করেন, আমার বিরুদ্ধে চাঁদা চাওয়া ও আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে বিপদে ফেলে হেনস্তা করতেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকেয়া আক্তার খাতুন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে শুক্রবার বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।