1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০২:৫৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

গতকাল বৃহস্পতিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়েছে। ক্যান্সার রোগ স¤পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং এই রোগ প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করাই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য। প্রতিবছর ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছেই। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছে এবং প্রতি বছর ২ লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী কয়েক দশকে ক্যান্সারে বাংলাদেশে মৃত্যু হার বাড়বে। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরিস) হিসাব মতে, ২০০৫ সালে বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুহার ছিল ৭.৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এ হার বেড়ে ১৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতেÑ বিশ্বে প্রতি বছর ২ লাখ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এসব শিশুর প্রায় ৮০ শতাংশেরই বাস মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। যেখানে ক্যান্সার আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার মাত্র ৫ শতাংশ। যদিও উন্নত দেশগুলোতে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের বেঁচে থাকার হার প্রায় ৮০ শতাংশ। উন্নত দেশের এই অভিজ্ঞতায় বলা চলেÑ প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ শনাক্ত করা গেলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া গেলে অধিকাংশ রোগীই সেরে উঠতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো উন্নয়নশীল বিশ্বে বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পায়।
সচেতনতা, সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের জীবন বাঁচানো সম্ভব। ক্যান্সার শুনলেই ধরে নেয়া হয় এ রোগ আর সারবে না, এর কোনো চিকিৎসা নেই, অনেক টাকার ব্যাপার ইত্যাদি। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব। বড়দের মতো শিশুদেরও ক্যান্সার হতে পারে। মূলত জিনগত ত্রুটি ও বিভিন্ন কারণে শিশুদের ক্যান্সার হয়। শিশুদের ক্যান্সার বেশিরভাগই জন্মগত। নিও-রোব্লুাস্টোমা, নেফ্রোব্লুাস্টোমা, রেটিনোব্লুাস্টোমা ইত্যাদি ক্যান্সার নবজাতক শিশু বা একেবারে ছোট শিশুদের মধ্যে দেখা দিতে পারে। লিউকোমিয়া, হজকিন্স, নন-হজকিন্স নিম্ফোমা, বোন টিউমার, বোন ম্যারো ক্যান্সার ইত্যাদি রোগ ছোট-বড় সব বয়সের শিশুদের হতে পারে। শিশুদের ক্যান্সারের তেমন কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে দুর্বলতা, অরুচি, ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দীর্ঘদিন ধরে থাকা জ্বর, স্লোফিভার, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, নাক ও দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্তপাত, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, মলমূত্র ও বমির সঙ্গে রক্তপাত, পেটে চাকার মতো অনুভব করা ইত্যাদি থাকলে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে অনেক সময় তা নিরাময় করা সহজ হয়।
বাংলাদেশে অসচেতনতা ও অপচিকিৎসায় ক্যান্সারে শিশুর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। গ্রামেগঞ্জে হাতুড়ে চিকিৎসাও একটি বড় সমস্যা। ঝাড়ফুঁক, টোটকা, কবিরাজ, ফকিরি বা এই ধরনের অপচিকিৎসকের পাল্লায় পড়ে রোগ নির্ণয়ে যেমন দেরি হয়, তেমনি শারীরিক অবনতিও হয়। এসব অপচিকিৎসার কারণে বিপন্ন হয়ে পড়ে রোগীর জীবন। আমরা মনে করিÑ এসব কুসংস্কার দূর করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে শিশুর জীবন রক্ষা করা সম্ভব।
কেবল ক্যান্সারই নয়, যে কোনো রোগ হলে চিকিৎসা জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে রোগটা যদি সঠিক সময়ে শনাক্ত হয় এবং সময়মতো সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে অনেক জটিল রোগও নিরাময় সম্ভব। ক্যান্সারও এর বাইরে নয়। ক্যান্সার নিরাময় কিংবা নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রায় স্বাভাবিক জীবন-যাপন করা সম্ভব, এমন দৃষ্টান্ত আমাদের দেশেও আছে। তাই আমরা মনে করিÑ শিশুদের ক্যান্সার বিষয়ে স্কুল, কলেজসহ সর্বত্র সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম চালানো গেলে অসংখ্য শিশুর জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com