বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে যে উন্নয়ন করছে, অতীতে আর কোনো সরকার এমন উন্নয়ন করেনি। দেশের প্রতিটি সেক্টরে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও আ.লীগ সরকার কাজ করেছে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। ডিজিটাল বাংলাদেশ শব্দটি এদেশে জনপ্রিয় স্লোগান হিসেবে গৃহীত হওয়ার দেশব্যাপী একটা সচেতনতার জোয়ার পরিলক্ষিত হচ্ছে। অন্যদিকে, টেলিযোগাযোগ ও ইনফরমেশন এ্যান্ড কম্যুনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকারের যে ব্যাপক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে তা বহির্বিশ্বেও প্রশংসিত হচ্ছে।
বেসরকারি হিসেবে বর্তমানে দেশ থেকে বছরে ৭০ কোটি ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশের এই অর্জন ক্রমশ দ্রুত থেকে দ্রুততর হবে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো নির্মাণ ও কানেকটিভিটি তৈরি যতোই এগিয়ে যেতে থাকবে।
বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হয়েছে সারাদেশে ২৮টি ‘আইসিটি পার্ক’ নির্মাণের। দেশের ৬৪ জেলা ও ৪৮৭টি উপজেলার ১৮ হাজার ১৩০টি সরকারি দপ্তরে ফাইবার অপটিকের ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। ৮০০ সরকারি অফিসে ভিডিও কনফারেন্সিং সিসটেম স্থাপিত হওয়ায় ব্যয়বহুল সফর এড়িয়েই প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ রাজধানীর নিজস্ব অফিসে বসেই বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন স¤পন্ন করতে সক্ষম হচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি এভাবেই ধীরে ধীরে বাস্তবে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। সরকারের আইসিটি নীতিমালায় রয়েছে দেশের প্রতিটি স্কুল ও বাড়িতে হাই¯িপড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্য। তাতে স্কুল থেকে ফিরে একজন শিক্ষার্থী বাড়িতে বসেই ইন্টারনেটে শিখতে পারবে, কাজ করতে পারবে। বাড়িতে বাড়িতে কানেকটিভিটি চলে আসায় আউটসোর্সিং থেকে শুরু করে ঘরে বসে অফিসও করা যাবে। এভাবে অর্থনৈতিক কর্মকা- বেড়ে যাওয়ায় মানুষের সচলতায় তাদের মাঝে আর্থিক সক্ষমতা বেড়ে যাবে।
এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, শুরু হতে যাওয়া ‘ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পটির বাস্তবায়নে এর মাধ্যমে দেশের ২ হাজার ৬০০ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ২০১৮ সালের মধ্যে ফাইবার অপটিক কেবল নেটওয়ার্ক পৌঁছে যাবে। তার ফলে, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলো (ইউডিসি) উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধার অধিকারী হবে। ইউডিসির উল্লেখযোগ্য সরকারী সেবাগুলো হলো : জমির পর্চা, জীবন বীমা, পল্লী বিদ্যুতের বিল পরিশোধ, সরকারি ফরম, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, অনলাইনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ভিজিএফ-ভিজিডি তালিকা, নাগরিক, সনদ, কৃষি তথ্য, স্বাস্থ্য পরামর্শ ইত্যাদি। বেসরকারি সেবার মধ্যে রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং, ক¤িপউটার প্রশিক্ষণ, ছবি তোলা, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল, চাকরির তথ্য, ভিসা আবেদন ও ট্র্যাকিং, ভিডিও কনফারেন্সিং ইত্যাদি।
বর্তমান সরকার যে পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে চাইছেন, তা যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করা গেলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এ রূপান্তর অসম্ভব কর্ম নয় মোটেই। এর জন্য অবশ্য প্রয়োজন উচ্চগতির সহজলভ্য ইন্টারনেট। ডিজিটাল বাংলাদেশ এর মূলে দরকার কানেকটিভিটি ও ইন্টারনেট। বিশেষ করে মোবাইল ইন্টারনেট। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণায়ও রয়েছে লক্ষ্য পূরণের বিভিন্ন প্রকল্প। মানসম্মত শিক্ষা, তথ্য জানার অধিকার ও সুযোগ এবং উপযুক্ত অবকাঠামোগত পর্যাপ্ত সহায়তা পাওয়া গেলে আমরা উন্নত দেশসমূহের প্রযুক্তি সহায়ক অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবো। ২০২০ সালের মধ্যে দেশকে প্রকৃতই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এ পরিণত করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনায় নিতে হবে।