মো. আমিনুল ইসলাম ::
সুনামগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে ১১ হাজারেরও বেশি সংখ্যক মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়টি মাসিক পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্সে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১৪ জুন মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সম্মেলন কক্ষে এ মাসিক পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিবুল ইসলাম। ওই কনফারেন্সে পরোয়ানা জারি ও কার্যকরণে সৃষ্ট সমস্যা চিহ্নিত ও দূরীকরণ, আদালতে সাক্ষীর হাজিরা নিশ্চিতকরণ, তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত প্রেরণ, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট যথাসময়ে প্রেরণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় জানানো হয়, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিবুল ইসলাম সুনামগঞ্জে যোগদানের পর তাঁর গৃহীত কিছু পদক্ষেপের ফলে গত ১১ মাসে অর্থাৎ ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সময়ে সর্বমোট ১১হাজার ২৫৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। জানা যায়, বর্তমানে ম্যাজিস্ট্রেসীর বিচারিক আদালত ও আমলী আদালতে ৭ হাজার ৮০৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এ সফলতার বিষয়টি সুনামগঞ্জের ইতিহাসে মামলা নিষ্পত্তির রেকর্ড বলে মন্তব্য করেছেন সভায় উপস্থিত আলোচকবৃন্দ। তাঁরা সার্বিক এ অগ্রগতিকে সাধুবাদ জানান।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান মজুমদার, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল আমীন, মো. দেলোয়ার হোসেন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মাদ আবু আমর, বেগম জেরিন সুলতানা ও রুবায়েত ফেরদৌস।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার, পি.পি (পাবলিক প্রসিকিউটর), আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, বিজিবি অধিনায়ক, বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভায় আলোচকবৃন্দ বিভিন্ন বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা করেন। পাশাপাশি পূর্ববর্তী পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্সে যে সকল কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছিল তার ফলাফল ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন।
এছাড়া বিভিন্ন থানা থেকে প্রেরিত সাক্ষীর সংখ্যা, পরোয়ানা তামিলের সংখ্যা, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সংখ্যা এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা নিষ্পত্তির বিবরণী উপস্থাপন করা হয়। একই সাথে অগ্রগতি ধরে রাখা ও আরো অধিকতর মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আরো দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল, আসামিকে গ্রেফতারপূর্বক আদালতে সোপর্দ করা ও যথাসময়ে সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার ব্যবস্থায় পুলিশকে আরো তৎপর হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়।
এসময় আলোচনা সভার সভাপতি বিশেষত যে সকল মামলায় দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় না সেগুলোতে অতিদ্রুত তদন্তের কাজ সমাপ্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্তের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরকে তাগিদ দেন। একই সাথে শিশু আসামি ও মহিলা হাজতীদের থানায় ও আদালতে অনুকূল পরিবেশ ও তাদের সাধারণ আসামিদের থেকে পৃথকভাবে রাখার নির্দেশ দেন।
মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিলের ক্ষেত্রে ডাক্তারদেরকে সুন্দর হাতের লেখা ও আরো সতর্ক হয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদানের নির্দেশনা দেন তিনি। মাদকের মামলায় বিজিবি সদস্যদেরকে যথাসময়ে হাজির হয়ে সাক্ষী দেওয়ার তাগিদ দেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিবুল ইসলাম। তিনি তাঁর বক্তব্যে জেলায় মাদকের বিস্তার অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে বলে মত প্রকাশ করেন এবং মাদক আইনের মামলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ দেন।