বিশেষ প্রতিনিধি ::
জগন্নাথপুরের দুটি ইউনিয়নের আপামর ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেও স্বস্তিতে নেই। কারণ পরাজিত প্রার্থীরা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্টে মামলা করায় নির্বাচিত নতুন পরিষদের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়েও কাক্সিক্ষত সেবাপ্রাপ্তি নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোটাররা।
জানা গেছে, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মজলুল হক উচ্চ আদালতে একটি রীট করেন। রীটের পরে নির্বাচনের তিনদিন আগে উচ্চ আদালত রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ২৮ মে’র নির্বাচন স্থগিত করে ভোটার এলাকা পুনর্বিন্যাসের নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম রানা সকল প্রার্থীদের অনুমতি নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে নির্বাচনের পক্ষে রীট করেন। তার রীটের প্রেক্ষিতে আদালত ৪ জুন নির্বাচন করার নির্দেশনা দিলে ওইদিন ৬ষ্ঠ দফা নির্বাচনের সঙ্গে ওই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম রানা নির্বাচিত হন। এ ঘটনায় নির্বাচন স্থগিতাদেশের রীটকারী মজলুল হক ফের উচ্চ আদালতে রীট করে গেজেট প্রকাশ না করার আবেদন করলে আদালত নির্বাচিত চেয়ারম্যানের গেজেট প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ফলে জনগণ কাক্সিক্ষত দিনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন।
এদিকে একই উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আবুল হাসান। নির্বাচনে ভোট গণনার সময় কামাল মিয়া তৈয়বী ও আবুল হাসানের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে। নির্বাচনের পর আবুল হাসান সৈয়দপুর আড়িকোণা, সুলতানপুর ও বুদরাই ভোটকেন্দ্রে পুনঃভোট গণনার জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করে আদালতের একটি ব্রাঞ্চ এই তিন ভোট কেন্দ্রে ফের ভোট গণনার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিন মাসের মধ্যেই ভোট পুনঃগণনার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। ফলে এই দুই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা যথাসময়ে দায়িত্ব পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যে কারণে সাধারণ জনগণ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সেবাপ্রাপ্তি হিসেবে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে বলে সাধারণ জনগণ মনে করেন।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ বলেন, আমরা সাধারণ ভোটাররা ভোট দিয়েও স্বস্তিতে নেই। কাক্সিক্ষত সেবাপ্রাপ্তি থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হবেন। এতে ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়েও জটিলতা দেখা দিবে। যত দ্রুত এই বিষয়গুলো সমাধান হবে আমরা সাধারণ জনতার জন্য মঙ্গল।