পত্রপত্রিকায় চোখ রাখলে প্রতিদিনই দেখতে হয় নানা ধরনের অপরাধের খবর। এর একটা বড় অংশ নারীর প্রতি সহিংসতা। এর মাঝে রয়েছে খুন, ধর্ষণ, ধর্ষণের পর খুন, খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া, শারীরিক নির্যাতনসহ নানা ধরনের অপরাধ। এসব ক্ষেত্রে অপরাধীরা এতটাই বেপরোয়া যে, মামলা করেও ভিকটিম ও পরিবারকে হুমকি-ধমকি পেতে হয়, আতঙ্কে থাকতে হয়। আবার ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে প্রচলিত ব্যবস্থায় প্রমাণও দুরূহ হয়ে ওঠে, ফলে প্রায়ই অপরাধী শাস্তি এড়াতে সক্ষম হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ভিকটিমের বিচার পাওয়াকে অনিশ্চিত করে তোলে।
এমনই একটি প্রতিবেদন গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় গত ১৬ ডিসেম্বর ইয়াহিয়া সরদার দিরাই পৌর শহরের আনোয়ারপুরে দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী হুমায়রা আক্তার মুন্নীর বাসায় গিয়ে মুন্নীর পড়ার টেবিলে থাকা একটি সাধারণ মানের ধারালো চাকু শিক্ষার্থী মুন্নীর পেটে ও বুকে বসিয়ে দেয়। প্রথমে পেটে আঘাত করলে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে আসে। পরে বুকে আঘাত করলে ছুরি আটকে যায়। আহত মুন্নী ছটফট করে তার মায়ের রুমে গেলে তিনি চিৎকার শুরু করেন। মুন্নীর চিৎকারে পাড়াপড়শীরা এগিয়ে এসে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অপরাধের বিচার না হলে, অপরাধীরা শাস্তি না পেলে তা আরো অপরাধপ্রবণতাকে উস্কে দেয়। তাই আমরা মনে করি অপরাধের দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। যখন একটি খুন, ধর্ষণ বা এরকম অপরাধের ঘটনা ঘটে তার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন অপরাধীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মুন্নী হত্যার পর সারা জেলায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে সেটাও খুবই ইতিবাচক একটা ব্যাপার। আমরা বিশ্বাস করি মুন্নী হত্যার মতো অপরাধের বিরুদ্ধে সমাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা খুবই দরকার। পরিবারে, সমাজে কোথাও যেন খুনী-ধর্ষণকারীরা প্রশ্রয় না পায়। তাই আমরা চাই দ্রুত বিচারে হুমায়রা আক্তার মুন্নীর হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।