একটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জনগোষ্ঠীর মনোবল দৃঢ় করতে বড় ভূমিকা পালন করে সে দেশের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী। বহিঃশত্রুর আক্রমণ মোকাবেলা করার সামর্থ্য অর্জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মনোবলও চাঙ্গা রাখে। বর্তমান সরকার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে ভূমিকা রেখে আসছে।
১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর তিন বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের সম্মিলিত আক্রমণে আমাদের কাক্সিক্ষত বিজয় ত্বরান্বিত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবিলা, বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতিগঠনমূলক কর্মকা-ে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে থাকে। কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে পেশাগত দক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।
বর্তমান সরকার সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যদের বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলছে। আমাদের দৃঢ়বিশ্বাস, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তাদের গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আত্মপ্রকাশ ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক এবং সামরিক নেতৃত্বের সার্বিক পরিকল্পনার অংশবিশেষ, যার প্রেক্ষিত তৈরি করা হয় ধাপে ধাপে। একাত্তরের সেই গৌরবোজ্জ্বল যাত্রা থেকে ৪৬ বছরে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ সমগ্র জাতির কাছে অত্যন্ত মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত।
আমরা মনে করি সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাষ্ট্র, দেশ ও সশস্ত্র বাহিনী সবার, সমগ্র জাতির স¤পদ। তাই সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে দেশে সশস্ত্র বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বুকে ধারণ করে দেশমাতৃকার সেবায় সদা সর্বত্র অতন্দ্র প্রহরীর মতো জাগ্রত থাকবে, এটাই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে জনসাধারণের প্রত্যাশা।